দেহঘড়ি পর্ব-০৪৮
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
হৃদরোগের টিসিএম দাওয়াই
কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বা হৃদরোগ হলো বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব বলছে, প্রতি বছর আনুমানিক ১ কোটি ৮০ লাখ জীবন কেড়ে নেয় এই রোগ। হৃদরোগ বলতে আসলে হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর ব্যাধিগুলোকে বোঝানো হয়, যার মধ্যে রয়েছে করোনারি হৃদরোগ, সেরিব্রোভাসকুলার রোগ, রিউম্যাটিক হৃদরোগ ও হৃদযন্ত্র সম্পর্কিত অন্যান্য রোগ। হৃদরোগজনিত মৃত্যর ৮০ শতাংশই ঘটে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের কারণে।
পশ্চিমা চিকিৎসাব্যবস্থায় দেহের অঙ্গগুলোকে পৃথক শারীরিক একক হিসাবে দেখা হয়। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসাব্যবস্থা বা টিসিএমে অঙ্গগুলোকে শরীরের ভিতর বিশাল নেটওয়ার্কের আন্তঃসম্পর্কিত অংশ হিসাবে দেখা হয়। তবে হৃদযন্ত্রকে সামগ্রিক শারীরিক স্বাস্থ্যের কেন্দ্রবিন্দু মনে করা হয়। এ চিকিৎসাব্যবস্থায় মনে করা হয়, শরীর সুস্থ থাকে তখন, যখন শরীরের মূল শক্তি বা ‘ছি’র দুটি উপাদান অর্থাৎ তাপশক্তি বা ‘ইয়াং’ এবং ঠান্ডাশক্তি বা ‘ইয়িন’-এর মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকে। এই ভারসাম্য-নীতি মতে, যদি আপনার কোনও অঙ্গ রোগাক্রান্ত হয় বা ঠিকমতো কাজ না করে, তবে অন্তত অন্য একটি অঙ্গও এর ফলে প্রভাবিত হবে।
হৃদরোগ প্রতিরোগ ও নিরাময়ে সবচেয়ে ভালো টিসিএম ব্যবস্থা হলো আকুপাংচার ও ভেষজ ওষুধ। মানুষের ওপর পরিচালিত বেশ কয়েকটি ক্লিনিকাল স্টাডিতে প্রমাণ মিলেছে, আকুপাংচার কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে এবং বিভিন্ন হৃদরোগ নিরাময় করতে পারে। শক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ক্ষেত্রে আকুপাংচারকে সবচেয়ে কার্যকর সহায়ক থেরাপি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিওর, অ্যারিথমিয়াস এবং সিস্টেমিক উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে আকুপাংচার বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে।