দেহঘড়ি পর্ব-০৪৭
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
মাম্পস চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকর ভেষজ ওষুধ
মাম্পস ভাইরাস-সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ। সাধারণত কয়েক দিনের জ্বর, মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা, ক্লান্তি ও ক্ষুধামন্দা দিয়ে এ রোগের সূচনা হয়। তারপর লালাগ্রন্থি ফুলে যায়। এর কারণে গাল ও চোয়ালও ফুলে যায়।
চীনা ভাষায় মাম্পসকে ‘চাসাই’ বলা হয়। ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসাব্যবস্থা বা টিসিএমে এ রোগের চিকিৎসার অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে অন্যতম ভেষজ চিকিৎসা এবং আকুপাংচার।
টিসিএমে মনে করা হয়, শরীরের ১৪টি মেরিডিয়ান দিয়ে ‘ছি’ বা মূল প্রাণশক্তির নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ বজায় রাখার মধ্য দিয়ে সুস্বাস্থ্য অর্জন করা যায়। ‘ছি’ হলো শরীরের তাপশক্তি বা ‘ইয়াং’ এবং ঠান্ডাশক্তি বা ‘ইয়িন’-এর সমন্বয়। এ চিকিৎসাব্যবস্থায় মনে করা হয়, মাম্পস হয় মূলত ‘শাওইয়াং’ ও ‘ইয়াংমিং’ মেরিডিয়ানে তাপশক্তি ও 'পাইরেটিক টক্সিসিটি' জমা হওয়ার কারণে। এর ফলে ‘ছি’ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং কান ও গাল এবং সেগুলোর আশপাশে এসব আটকে পড়ে।
টিসিএমে মাম্পসসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ভেষজ ওষুধ ব্যবহৃত হচ্ছে হাজার হাজার বছর ধরে। চীনা চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন, চীনা ভেষজ মাম্পস সারতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর। তবে লক্ষণভেদে রোগীদের আলাদা আলাদা ভেষজ ফর্মুলেশন ব্যবহার হয়। যেমন, জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয় জিপসাম ফাইব্রোসাম এবং ব্যথানাশক হিসাবে ব্যবহৃত হয় বুপ্লেউরাম চাইনিজ ডিসি। মাম্পস চিকিৎসার সাধারণ ভেষজ উপকরণগুলোর মধ্যে থাকে রেডিক্স স্কুটেলারিয়া, চাইনিজ গোল্ডথ্রেড, চেচিয়াং ফিগওয়ার্টের মূল, রেশম পোকার লার্ভা, জিপসাম ফাইব্রোসাম, রেডিক্স আইসাটিডিস, রেডিক্স স্কুটেলারিয়ার ইত্যাদি। বিভিন্ন প্যাথলোজিক্যাল গবেষণা দেখা গেছে, ফ্লোস লনিসেরা ও রেডিক্স আইসাটিডিসে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী উপাদান রয়েছে আর রেডিক্স স্কুটেলারিয়ারে রয়েছে অ্যান্টিফ্লোজিস্টিক বৈশিষ্ট্য।