দেহঘড়ি পর্ব-০৩২
মুখের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পশ্চিমা চিকিৎসাব্যবস্থায় সাধারণত প্রিডনিসোন স্টেরয়েড গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে চিরাচরিত চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা (টিসিএম) ও আকুপাংচার বেল’স পোলজি নিরাময়ের একটি নিরাপদ ও কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি। যারা স্টেরয়েড এড়াতে চান তাদের জন্য এটি সবচেয়ে ভালো বিকল্প।
বেল’স পোলজি হলে সপ্তম ক্র্যানিয়াল নার্ভের প্রদাহ মুখের একটি অংশের পেশী নিয়ন্ত্রণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফেসিয়াল প্যারালাইসিস বা মুখের পক্ষাঘাত হলে প্রথমেই প্রাথমিক স্ট্রোক পরীক্ষার নির্দেশিকাগুলো মেনে বোঝার চেষ্টা করুন স্ট্রোকের কারণে সেটা হয়েছে কিনা। যদি স্ট্রোকের লক্ষণ না থাকে, তাহলে বোঝার চেষ্টা করুন বেল’স পোলজির লক্ষণ আছে কিনা। বেল’স পোলজির প্রধান প্রধান লক্ষণ হলো: মুখের দুর্বলতা বা মুখের পক্ষাঘাত, যা পুরো মুখ বা মুখের একটি অংশকে প্রভাবিত করে; মুখের একপাশ ঝুলে যাওয়া; অল্প জ্বর; মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরা; আক্রান্ত পাশের কানের পিছনে ব্যথা; ঘাড় শক্ত হওয়া; এক চোখ বন্ধ করতে না পারা; মুখ দিয়ে লালা ঝরা; স্বাদ বোধ নষ্ট হওয়া; এবং একদিকে শব্দের প্রতি অধিক সংবেদনশীলতা। কখনও কখনও মুখের ফোলা স্নায়ু থেকে ব্যথা হতে পারে। তবে বেল’স পোলজির কারণে তীব্র ব্যথা হয় না।
টিসিএম তত্ত্বে, যে কোনও রোগের জন্য শরীরের উপর প্রভাব ফেলা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্যাথোজেন বা রোগজীবাণুকে দায়ী করা হয়। বেল’স পোলজিকে বায়ু ও ঠান্ডার আক্রমণের ফল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এমন আক্রমণ মাথা ও মুখমণ্ডলের মধ্য দিয়ে মূল জীবন শক্তি বা ‘ছি’ ও রক্তের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত করে। ‘ছি’ হলো এমন একটি শক্তি যা শরীরকে বাহ্যিক রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে, কিন্তু মানসিক চাপ, ক্লান্তি, ঠান্ডা বাতাস সরাসরি মুখে প্রবাহিত হওয়া বা সাম্প্রতিক অসুস্থতার কারণে যদি ‘ছি’ দুর্বল হয়ে যায়, তাহলে বাতাসের আক্রমণে এটা পরাস্ত হতে পারে।