দেহঘড়ি পর্ব-০২৭
ভারসাম্য অর্জন
অন্য যে কোনও ব্যাধির মতোই হাইপারথাইরয়েডিজম ও হাইপোথাইরয়েডিজম উভয় ক্ষেত্রে টিসিএমে মনে করে, এ ব্যাধির কারণ শরীরে মূল শক্তি ‘ছি’র ঠান্ডা শক্তি ‘ইয়িন’ এবং তাপশক্তি ‘ইয়াং’র ভারসাম্যহীনতা। টিসিএম’র লক্ষ্য থাকে এই দুই শক্তির মধ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা। টিসিএম চিকিত্সার ফর্মুলা প্রত্যেক রোগীর উপসর্গ অনুসারে তৈরি করা হয়। যেমন ধরুন, হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি যদি এ রোগের সাধারণ উপসর্গগুলোর পাশাপাশি মাথা ঘোরা বোধ করেন, তাহলে তার চিকিৎসা হবে অন্য রোগীর থেকে আলাদা। যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক কলেজ অব ওরিয়েন্টাল মেডিসিন (পিসিওএম) বলছে, থাইরয়েড ব্যাধির চিকিত্সার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলো হলো আকুপাংচার, ভেষজ ওষুধ ও খাদ্য থেরাপি।
আকুপাংচার
আকুপাংচারে শরীরের নির্দিষ্ট বিন্দুতে খুব চিকন সূঁচ ঢোকানো হয়, যা শরীরের মধ্য দিয়ে ‘ছি’র প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং এর মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতায় ভূমিকা পালন করে। একজন টিসিএম চিকিৎসকের লক্ষ্য থাকে ‘ছি’ প্রবাহে সেই ভারসাম্যহীনতা দূর করা, যা থাইরয়েড ব্যাধির জন্য দায়ী।
ঔষধি
টিসিএমে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় গাছের পাতা, শিকড়, কাণ্ড, ফুল ও বীজ ব্যবহার করা হয়। এগুলোকে ক্বাথ, দানা বা পাউডারে রূপান্তরিত করা হয়। ভেষজ এককভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে বা কয়েকটি একসঙ্গে মিলেয়েও ব্যবহার করা যায়, যাকে ফর্মুলা বলা হয়। হাজার হাজার চাইনিজ ভেষজের পাশাপাশি অনেক ভেষজ ফর্মুলা রয়েছে। জানিয়ে দেবো সাধারণ কিছু ভেষজ ও ভেষজ ফর্মুলা সম্পর্কে:
হাইপোথাইরয়েডিজমে সাধারণত যেসব ভেষজ ও ভেষজ ফর্মুলা ব্যবহার করা হয়, সেগুলো হলো রেহমাননিয়া (শু তি হুয়াং) ডায়োস্কোরিয়া (শান ইয়াও), কর্নাস (শান চু ইয়ু), কিডনি ইয়িন টনিক (লিউ ওয়েই তি হুয়াং ওয়ান), লিভার ক্লিনজিং (চি চি ছিং কান থাং) এবং হার্ট ইয়িন টনিক (থিয়ান ওয়াং বু সিন তান)। অন্যদিকে হাইপারথাইরয়েডিজমে ব্যবহৃত ভেষজ ও ভেষজ ফর্মুলাগুলো হলো দারুচিনির ছাল (রৌ কুই), অ্যাকোনাইট (ফু চি) এব কিডনি ইয়াং টনিক (চিন কুই শেন ছি ওয়ান)।