দেহঘড়ি পর্ব-০২১
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
রক্তস্বল্পতা সারতে টিসিএম
আপনি কি ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করছেন? আপনার ত্বকের রং কি ফ্যাকাশে হয়ে গেছে? যদি তাই হয়, তাহলে আপনি সম্ভবত অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। অ্যানিমিয়া এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর লোহিত রক্তকণিকা থাকে না। লোহিত রক্তকণিকা শারীরিক সুস্থতার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি দেহের টিস্যুতে অক্সিজেন যোগান দেয়। আয়রনের ঘাটতি, ভিটামিন বি-টুয়েলভের অভাব, ফলিক অ্যাসিডের অভাব কিংবা পারিবারিক ইতিহাস – নানা কারণে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে। যে কারণেই হোক না কেন, ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা বা টিসিএম অ্যানিমিয়া চিকিৎসায় একটা চমৎকার বিকল্প হতে পারে।
রক্তাল্পতার বিভিন্ন প্রকার রয়েছে। কিছু জিনগতভাবে জন্মসূত্রে দেহে আসে। গর্ভাবস্থা, আঘাত, মনোনিউক্লিওসিসের মতো অসুস্থতা বা পুষ্টির ঘাটতির মতো কারণেও রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে। কোন কোন ধরনের অ্যানিমিয়া লুপাস, ক্রোহনস বা সিলিয়াক রোগের মতো অটোইমিউন ডিজঅর্ডারে সঙ্গে সম্পর্কিত। দুর্ঘটনা বা অস্ত্রোপচারের কারণে বা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণেও রক্তস্বল্পতা হতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ রক্তস্বল্পতা প্রধানত ৫ ধরনের। এগুলো হলো সিকেল সেল অ্যানিমিয়া, মারাত্মক রক্তস্বল্পতা, আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা, থ্যালাসেমিয়া ও অ্যাপলাস্টিক অ্যানিমিয়া।
রক্তশূন্যতা হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গগুলো হলো গায়ের বর্ণ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা ও ক্লান্তি অনুভব করা, মাথা ঘোরা ও মাথাব্যথা। এর অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেশীর দূর্বলতা, শ্বাসকষ্ট ও দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, বুক ধড়ফড়ানি ও দ্রুত হৃদস্পন্দন, নিম্ন রক্তচাপ, বিরক্তি, রাগ, হতাশা, বিষণ্নতা ও উদ্বেগের অনুভূতি, এবং মলের গঠনে পরিবর্তন। এছাড়া রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে বরফ খাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা জাগতে পারে।