দেহঘড়ি পর্ব-০২০
এই ছয়টি কারণের মধ্যে বাতাস ও আগুন চোখের তাপশক্তি বা ‘ইয়াং’য়ে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। চোখ যখন খোলা হয়, তখন সেটি বায়ু থেকে আসা প্যাথোজেনের কাছে নাজুক হয়ে পড়ে। প্যাথোজেন চোখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। বায়ু থেকে সৃষ্ট চোখের ব্যাধিগুলো দ্রুত তীব্র অবস্থায় মোড় নেয়।
শীতলতা ও ক্লেদের ফলে ঠান্ডাশক্তি বা ‘ইয়িন’য়ে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। টিসিএমে মনে করা হয়, দুর্বল দৃষ্টিশক্তির সবচেয়ে বড় কারণ হলো শীতলতা ও ক্লেদ, যার ফলে চোখের নড়াচড়া কমে যায়। শীতলতাসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার কারণে অত্যাবশ্যক উষ্ণতা ও পুষ্টি থেকে চোখ বঞ্চিত হয়। শীতলতা চোখের চারপাশের পেশী, শিরা ও ত্বকে অবস্থান নেয়, যার ফলে দৃষ্টিশক্তির আরও অবনতি ঘটে।
চোখের রোগ ও দৃষ্টিশক্তি কমার টিসিএম চিকিৎসা দেওয়া হয় মূলত বিভিন্ন ভেষজের ভিন্ন ভিন্ন ফর্মুলেশনে। জানিয়ে দিচ্ছি চোখের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রধান ভেষজগুলো সম্পর্কে:
চন্দ্রমল্লিকা ফুল বা চু হুয়া: এ ভেষজ লিভার পরিষ্কার করে। এর ফলে চোখের লালচে ভাব কমে, চোখের টিস্যু ছেড়া হ্রাস পায়, চোখের ফ্লোটার দূর হয় এবং ঝাপসা দৃষ্টি পরিষ্কার হয়।
সেলোসিয়া বীজ বা ছিং সিয়াং চি: চোখের ব্যথা, লালচে ভাব ও ফোলা কমায় এবং ছানি প্রতিরোধ করে এই ভেষজ।
সিউডিগিনসেং শেকড় বা সান ছি: এটা চোখের ছেড়া রক্তনালী মেরামত করে এবং ‘রক্তের দাগ’ পরিষ্কার করে।
সিকাডা মোল্টিং বা ছান থুই: এই ভেষজ ঝাপসা দৃষ্টি পরিষ্কার করে এবং লালভাব কমায়। চোখের ব্যাথা এবং ফোলাভাব দূর করার জন্যও এ ভেষজ ব্যবহৃত হয়।
চীনা ওল্ফবেরি ফল বা ছৌ ছি চি: লিভার ও কিডনিতে ‘ছি’য়ের ঘাটতিতে দূর করে এই ভেষজ। এর মধ্য দিয়ে এটা ঝাপসা দৃষ্টি পরিস্কার করে এবং দৃষ্টিশক্তি হ্রাস রোধ করে।
প্যাগোডা ফুল বা হুয়াই হুয়া মি: লিভারের তাপের কারণে মাথা ঘোরা, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া এবং চোখ লাল হয়ে ওঠার চিকিত্সায় এটি ব্যবহৃত হয়।