দেহঘড়ি পর্ব-০২০
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
দৃষ্টিশক্তি রক্ষায় টিসিএম
চোখকে বলা হয় আত্মার জানালা। ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা বা টিসিএমে চোখকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়; একে শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকলাপের জানালা মনে করা হয়। কারণ টিসিএমে মনে করা হয়, চোখ দেহের সকল অভ্যন্তরীণ-প্রত্যঙ্গর সঙ্গে সংযুক্ত। এর প্রতিটি অংশ দেহের মূল জীবনীশক্তি বা ‘ছি’ উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংশ্লিষ্ট অঙ্গের সঙ্গে যুক্ত। এসব অঙ্গকে টিসিএমে ‘জ্যাং’ অঙ্গ বলে অভিহিত করা হয়। যেমন আইরিস বা চোখের মনি লিভারের সঙ্গে যুক্ত, চোখের কোণ বা ক্যান্থি যুক্ত হৃদযন্ত্রের সঙ্গে, চোখের উপরের ও নীচের পাতা প্লীহা, কনজাংটিভা বা চোখের কর্নিয়ার আচ্ছাদন ও ফুসফুসের সঙ্গে এবং চোখের তারা কিডনির সঙ্গে যুক্ত।
টিসিএমে মনে করা হয়, ছয়টি বাহ্যিক প্যাথোজেন বা রোগ সৃষ্টিকারী উপাদান দৃষ্টিশক্তি কমাতে পারে। প্যাথোজেনগুলো হলো তাপ, শীতলতা, বায়ু, ক্লেদ, শুষ্কতা ও গ্রীষ্মের তাপ। এর মধ্যে তাপের কারণে চোখে কনজেক্টিভাইটিস হয় বা চোখ ওঠে। এর ফলে চোখ ফুলে যায়, প্রদাহ তৈরি হয় এবং লালচে হয়ে যায়। শীতলতার কারণে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষয় যেমন ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং গ্লুকোমার মতো রোগ সৃষ্টি হয়। এতে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। বায়ুর কারণে আকস্মিকভাবে দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করতে পারে। অন্যদিকে ক্লেদজনিত কারণে চোখ দিয়ে শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ নিঃসরণ হতে পারে এব চোখ ফুলে যেতে পারে। শুষ্কতার ফলে চোখে চুলকানি ও লালভাব দেখা দেয় আর গ্রীষ্মের তাপের কারণে প্রদাহ হয় এবং শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থের নিঃসরণ ঘটে।