দেহঘড়ি পর্ব-৮২
প্লীহা ও পাকস্থলীর কার্যকারিতাকে দুর্বল বা ব্যাহত করে এমন যে কোনও কিছু শুধুমাত্র হজমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না, বরং এ সম্পর্কিত অঙ্গ ও টিস্যুর বিকাশ, হরমোন উত্পাদন, এবং মেজাজের উপরও প্রভাব ফেলে। যদিও ব্যক্তিভেদে সংবেদনশীলতা পৃথক হতে পারে, সাধারণভাবে ক্ষতিকর খাবারের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাবার, চর্বিযুক্ত বা মশলাদার খাবার, চিনি ও অ্যালকোহল, কম রান্না করা বা ঠান্ডা খাবার। এছাড়া অপর্যাপ্ত বিশ্রাম কিংবা দুঃখ, রাগ, উদ্বেগ ও অতিরিক্ত চিন্তার মতো মেজাজের ভারসাম্যহীনতা হজমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের খাবারের প্রতি আকর্ষণ বোধ করি। টিসিএম উপযুক্ত মৌসুমী খাবারের উপর খুব জোর দেয়। বসন্ত হলো এমন কিছু পরিত্যাগ করার সময় যা আমরা শীতকালে কম কার্যকলাপ এবং ছুটিতে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের কারণে তৈরি করি। টিসিএম বসন্তকাল ও গ্রীষ্মকালে হালকা ও তিক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়, যা ঋতুর সাথে সম্পর্কিত দুট প্রধান অঙ্গ লিভার ও গলব্লাডারকে পুষ্ট করে, যাতে সারা শরীরে সুন্দরভাবে শক্তি প্রবাহিত হয়। আমরা আমাদের জীবনীশক্তি বাড়াতে মূলার তীক্ষ্ণতা এবং বীট ও গাজরের মিষ্টতাও ব্যবহার করতে পারি। টিসিএম-এ বসন্তকালে পুষ্টিঘন মাংস ও স্টার্চের ব্যবহার কমানো উপকারী বলে মনে করা হয়।
শীতল তাপমাত্রা উষ্ণ ঋতুর তুলনায় বিভিন্ন পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা বাড়ায় এবং আমরা সেই অনুযায়ী শক্তিশালী এবং পুষ্টিঘন খাবার খাই। শরৎকাল মাটি ও ধাতব উপাদানগুলোর মধ্যে ছেদকে প্রতিনিধিত্ব করে। এসময় শীতকালীন স্কোয়াশ, আপেল, নাশপাতি, মূলজাত শাকসবজি, গাঢ় শাক, মাশরুম, রান্না করা শস্য, মটরশুটি ও মাংস সবই খাবার তালিকায় রাখা যায়। পাচনতন্ত্রকে ‘ঠাণ্ডাজনিত খারাপ প্রভাব’ থেকে রক্ষা করার জন্য উষ্ণ সুগন্ধযুক্ত মশলা অন্তর্ভুক্ত করাও এসময় গুরুত্বপূর্ণ। ‘ঠাণ্ডাজনিত খারাপ প্রভাব’ আমাদের অঙ্গের কার্যকারিতা এবং বিপাক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত ও ধ্বংস করতে পারে।