চীনে আর্থিক লেনদেনে নোট ব্যবহারের দিন কি শেষের পথে? অথবা হাসিতেই মূল্য পরিশোধ?
এছাড়া চায়না সরকার দেশব্যাপী ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থা ই-ইউয়ান চালু করেছে। এরই মধ্যে প্রায় অর্ধশত কোটি মানুষ এই ওয়ালেট অ্যাপ ডাউনলোড করে তাদের লেনদেনের কাজ সারছে। শহুরে প্রায় শতভাগ লোক কাগুজে মুদ্রাবিহীন ডিজিটাল বিনিময় ব্যবস্থার সাথে জড়িত। পিছিয়ে নেই গ্রামীণ সমাজও। শেনজেন শহরে শতভাগ মানুষ ডিজিটাল লেনদেন করে। একেবারে দু চারজন বয়স্ক লোক যারা মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার জানে না তারাই শুধু কাগুজে মুদ্রায় কেনাকাটা করে। এমনকি করোনার কারণে ভিক্ষুক বা সাহায্য প্রার্থী পর্যন্ত সরাসরি ইউয়ানে ভিক্ষা বা সাহায্য নেন না। তার কাছে একটি কিউআর কোড থাকে। এই কোড স্ক্যান করে ভিক্ষা বা সাহায্য দিতে হয়। বিদেশীরাও পিছিয়ে নেই মোবাইল লেনদেনে। কারও নিজদেশে ব্যাংক একাউন্ট এবং ভিসা কার্ড থাকলে আলি পের মাধ্যমে চীনে লেনদেন করতে পারে। এরই মধ্যে দুটি ব্যাংক কাগুজে মুদ্রার ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাংক দুটি হল ঝংকুচান এবং নিউআপ ব্যাংক অফ লিয়াওনিং। জেডিসহ বড় বড় কোম্পানি চালু করেছে ক্যাসলেস বা সরাসরি মুদ্রাবিহীন ক্রয়-বিক্রয় ব্যবস্থা।
চীনে শুধু মোবাইলেই পেমেন্ট বা লেনদেন থেমে রয়নি। টাকা নাই, কার্ড নাই, মোবাইল নাই? তাতেও সমস্যা নাই। শুধুমাত্র ফেস রিকগনিশন সিস্টেমের মাধ্যমে মুখের অভিব্যক্তি দিয়েও লেনদেন করা যায়। প্রযুক্তি আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? চীনের থিয়ানজিনে এমনই একটি সেল্ফ সার্ভিস সুপারমার্কেট চালু হয়েছে। মার্কেটে রয়েছে নির্দিষ্ট একটি ডিজিটাল ডিভাইস। ক্রয় করা পণ্য এই ডিভাইসে রাখলে পণ্যের গায়ের কোড স্ক্যান করে এর দাম নির্ধারিত হয়। এরপর ডিভাইসের ক্যামেরার দিকে মুখ ফেরালেই ক্রেতার একাউন্ট থেকে মূল্য পরিশোধ হয়ে যায়। এছাড়া একশ’র বেশি শহরে আলিবাবা ফেস রিকগনিশন লেনদেন ব্যবস্থা চালু করেছে। ফেস রিকগনিশন অ্যাপ চালু করে হাসি দিলেই এটা নির্দিষ্ট ক্রেতাকে চিনতে পারে। তার একাউন্ট থেকে মূল্য পরিশোধ হয়ে যায়। এই ব্যবস্থা আরও সুবিধাজনক এবং নিরাপদ। মুখের হাসিই সিগনেচার হিসেবে কাজ করে।