চীনে আর্থিক লেনদেনে নোট ব্যবহারের দিন কি শেষের পথে? অথবা হাসিতেই মূল্য পরিশোধ?
প্রযুক্তি চীনকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে বা দেশটি কতটা উন্নতি করেছে বাইরে থেকে তা অনুমান করা কঠিণ। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। সত্যিকারের ডিজিটাল সমাজ বলতে যা বোঝায় তা এখন চীনে বাস্তব। একমাত্র প্রযুক্তিগত এই উন্নতির কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। যেমন কাগুজে মুদ্রা স্পর্শবিহীন লেনদেনের কথাই ধরা যাক। বর্তমানে চীন কাগুজে মুদ্রাস্পর্শবিহীন সমাজের একটা বড় উদাহরণে পরিণত দেশ। লেনদেনের সবকিছুই চলছে গণনা ও স্পর্শবিহীন ডিজিটাল পদ্ধতিতে। প্রাচীনকালে পণ্যদ্রব্যের মাধ্যমে বিনিময়ের কাজ সারতো মানুষ। যার যে পণ্য দরকার হত সে সেই পণ্য গ্রহণ করতো নিজের উৎপাদিত পণ্যের বিনিময়ে। এই পন্থায় দুরীভূত হত মানুষের অভাব। কালের পরিক্রমায় উদ্ভব হল মুদ্রার। মুদ্রা হিসেবে মানুষ স্বর্ণ, রৌপা, তামাসহ নানা ধাতুর ব্যবহার করে। সবশেষ চালু হয় কাগজী মুদ্রার। যা বর্তমানেও বিশ্বের প্রায় সবদেশে প্রচলিত। মুদ্রাকে কেন্দ্র করেই মানুষের গোটা অর্থব্যবস্থা পরিচালিত হয়। কিন্তু চীনে বর্তমানে মনে হয় এই কাগুজে মুদ্রা বা নোটের দিন শেষ হতে চলেছে। চায়না সমাজে নোটের প্রচলন নেই বললেই চলে। কেনাকাটা থেকে শুরু করে সবধরনের আর্থিক লেনদেন চলে অনলাইনে। এই ক্ষেত্রে দেশটি এক বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে। কি যানবাহনে চড়া, কি কেনাকাটা করা, কি হোটেল-রোস্তেরাঁর বিল দেয়া-সব জায়গায় এখন চলে ডিজিটাল মূল্য পরিশোধ। মানিব্যাগ ছাড়া বের হলেও খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা সবকিছুই চলে। একজন মানুষের কোন সমস্যাই হয় না এসব করতে। এর জন্য থাকতে হবে শুধু একটা স্মার্ট ফোন ও ডিজিটাল একাউন্ট। চীনে বর্তমানে একজন মানুষ দিন কেন মাসের পর মাস কাগুজে মুদ্রা ছাড়াই দিব্যি জীবন যাপন করতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইচ্যাট দিয়েই সবকিছুর মূল্য পরিশোধ করা যায়। ধরা যাক কেউ কোন চাকরি করেন। মাস শেষে তার বেতন চলে যাবে ব্যাংক একাউন্টে। ব্যক্তিটি ব্যাংক একাউন্টের সাথে উইচ্যাট কানেক্ট করে নেবে। এরপর সব লেনদেন করবে উইচ্যাটে। মাসের পর মাস কাগুজে মুদ্রা ছাড়া চলতে তার কোন অসুবিধা হবে না। শুধু লেনদেনই নয়, উইচ্যাটের মাধ্যমে অন্যের কাছে টাকা ট্রান্সফারও করা যায়। উইচ্যাটের পরই রয়েছে আলি পে’র মাধ্যমে লেনদেন। আলি পে’র মাধ্যমে লেনদেনও চীনাদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়।