চীনের খ্যাতিমান অভিনেতা ও মার্শাল আর্টিস্ট ইউ হাই
‘শাওলিন টেম্পল’ নামের মুভি’র পর ইউ হাই অনেক মার্শাল আর্ট চলচ্চিত্রে ‘মাস্টারের’ চরিত্রে অভিনয় করেন। এক সাক্ষাত্কারে ইউ হাই বলেন, চলচ্চিত্রে অভিনয় করা শুধুমাত্র তাঁর শখ, তিনি একজন মার্শাল আর্ট শিক্ষক ও কর্মী।
১৯৪২ সালে তিনি শানতোং প্রদেশের ইয়েন থাই শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি সবসময়ই অসুস্থ থাকতেন। তাই বাবা তার শরীর শক্তপোক্ত করতে তাকে মার্শাল আর্ট শেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। বাবা তার বন্ধু লিন চিংশান তথা ‘সেভেন স্টার ম্যান্টিস ফিস্টের প্রধানের’ কাছে ১২ বছর বয়সী ইউ হাইকে পাঠান। লিন চিংশান খ্যাতিনাম মার্শাল আর্ট মাস্টার ছিলেন।
মাস্টারকে অনুসরণ করে ইউ হাই ছাংছুয়েনসহ অনেক কংফু শেখেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি জাতীয়, প্রাদেশিক এবং পৌরসভার তিন-স্তরের মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং তিন বার পুরস্কার জিতে নেন। চমৎকার ফলাফল নিয়ে তিনি শানতোং স্পোর্টস টেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি হন এবং একজন আনুষ্ঠানিক জাতীয় মার্শাল আর্ট অ্যাথলিট হন। তখন থেকে তিনি উশু’র সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হয়ে পড়েন।
তিনি একাধিকবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন এবং চীনের অন্যতম বিখ্যাত মার্শাল আর্ট ক্রীড়াবিদ হয়ে ওঠেন। যে-যুগে চায়নিজ কুংফু সারা বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় ছিল, সে-যুগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং তুরস্কসহ ৩০টিরও বেশি দেশ সফর করেন। ১৯৬০ সালের শেষ দিকে তিনি তত্কালীন চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছেন ই’র সঙ্গে মিয়ানমার সফর করেন।
১৯৬৬ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি শানতোং প্রাদেশিক উশু দলের অধিনায়ক এবং প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে শানতোং প্রাদেশিক উশু দল সারা চীনে সাফল্য অর্জন করে। চলচ্চিত্র ও টিভি অঙ্গনে প্রবেশের পর তিনি উশুকে অবহেলা করেননি। তিনি ছেলেকে ভালো করে উশু শেখান।
ইউ হাইয়ের ছেলে ইউ থাও ৯ বছর বয়সে বাবা’র কাছে উশু শিখতে শুরু করেন। তিনি বহুবার দেশের গুরুত্বপূর্ণ উশু প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ২০০১ সালে তিনি শানতোং প্রদেশের উই হাই শহরে উশু’র সংস্কৃতি বিনিময়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং এটিই চীনের একমাত্র ‘প্রেয়িং ম্যান্টিস ফিস্ট’ প্রশিক্ষণকেন্দ্র।
ইউ হাই সবসময় বলতেন, ‘শিক্ষার্থীদেরকে মৌলিক কলাকৌশল শেখানোর পাশাপাশি কীভাবে একজন মানুষ হওয়া যায় তা-ও শেখানো জরুরি।’ ইউ হাই নৈতিকতার ওপর সবক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতেন।
ভক্তরা তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে চাইলে, তিনি কখনও না করতেন না। খুব ক্লান্ত থাকলেও হাসিমুখে ভক্তদের আবদার রাখতেন। তিনি বলেন, “আমি একথা কখনও ভুলি না যে, ভক্ত না থাকলে চলচ্চিত্রের তারকা হওয়া যায় না।”
২. চেচিয়াং প্রদেশের হেংতিয়েন জেলার লণ্ঠন শো প্রসঙ্গ
হেংতিয়েন জেলায় জাতীয় ফাইভ-এ পর্যায়ের দর্শনীয় স্থান ‘হেংতিয়েন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন সিটি’ রয়েছে। এখানে ১৪টি বড় আকারের নৈসর্গিক স্পট এবং ফিল্ম ও টেলিভিশন শুটিং বেস আছে। এ জেলাকে ‘চীনের হলিউড’ বলা হয়। চীনের অনেক চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের শুটিং এখানে হয়েছে।