বাংলা

চীনের খ্যাতিমান অভিনেতা ও মার্শাল আর্টিস্ট ইউ হাই

CMGPublished: 2023-02-09 09:49:41
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের ছুটির সময় হেংতিয়েন জেলায় পর্যটকদের ভীড় দেখা গেছে। চীনের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন পর্যটনের একটি আইকনিক গন্তব্য হিসেবে হেংতিয়েন ফিল্ম ও টেলিভিশন সিটি বসন্ত উৎসবের ছুটিতে ৯ লাখ ২০ হাজার পর্যটককে আকর্ষণ করেছে।

চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের ছুটিতে হেংতিয়েন ফিল্ম ও টেলিভিশন সিটি গত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত ‘বসন্ত উত্সব মন্দির মেলা’র আয়োজন অব্যাহত রাখে এবং চীনের সোং রাজবংশের শৈলীসম্পন্ন লণ্ঠন শো তৈরি করে। লণ্ঠন শো-তে সোং রাজবংশের কবিতায় বর্ণিত লণ্ঠন উত্সবের দুর্দান্ত দৃশ্যকে তুলে ধরা হয় এবং ফিল্ম ও টেলিভিশন ল্যান্ডস্কেপিং কৌশল ব্যবহার করে মন্দিরমেলার দৃশ্যের সাথে সোং রাজবংশের সংস্কৃতিকে একত্রিত করা হয়।

খরগোশ বর্ষে প্রাচীন শৈলীর লণ্ঠন ঐতিহ্যগত সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। লণ্ঠন শো-তে সোং রাজবংশ আমলের বিবাহের রীতিনীতি, চায়ের অর্ডার ও ফুল সাজানোসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক চিত্র তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, ডজন খানেক সোং রাজবংশ আমলের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। এর মাধ্যমে পর্যটকরা সোং রাজবংশ আমলের সংস্কৃতি উপভোগ করতে পারেন।

হেংতিয়েনের লণ্ঠন উত্সবে পর্যটকরা কেবল লণ্ঠন উপভোগ করেননি, কেউ কেউ অভিনেতাও হয়েছেন; ফিল্ম ও টেলিভিশনে অভিনয় করার অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছেন। অনেক পর্যটক প্রাচীন চীনের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র বা টিভি নাটকের শুটিংয়ের জায়গায় ছবি তুলেছেন।

চীনের আনহুই প্রদেশ থেকে আসা ম্যাডাম চাং এবং তার মা হানফু পোশাক পরে এখানে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি, যেন সত্যিকারভাবে সোং রাজবংশে ফিরে গিয়েছি। মাঝেমাঝে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে সোং রাজবংশের বিখ্যাত মানুষ। কী আশ্চর্য।’ লণ্ঠন শো-তে পর্যটকরা সরাসরি শুটিং করার জায়গায় প্রবেশ করতে পারেন। নিজেই পরিচালক বা অভিনেতার মজা পেতে পারেন।

বসন্ত উত্সবের সময় থিম-যুক্ত পরিবেশনা ছাড়াও, হেংতিয়েনের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে নানা বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রাস্তায় উঠে পর্যটকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

চীনের চেচিয়াং প্রদেশের উয়েনচৌ শহর থেকে লি ইউন চিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে আসেন। তিনি বলেন, ‘বসন্ত উত্সবের সময় হেংতিয়েন দর্শনীয় স্থানগুলোর বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে অনেক বৈচিত্র্যময়। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই নিজ নিজ পছন্দের অনুষ্ঠান ও পরিবেশনা উপভোগ করতে পারেন। বিশেষ করে, চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের সুপরিচিত দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি অনুভব করতে পারেন। আমরা খুব খুশি হয়েছি এখানে এসে।’

৩. কবিতাপ্রেমী একজন সাধারণ গ্রামীণ শ্রমিকের বিখ্যাত হয়ে ওঠার গল্প

সম্প্রতি ‘চীনের কবিতা প্রতিযোগিতা -২০২৩’ নামের এক টিভি অনুষ্ঠান শেষ হয়। চীনের কানসু প্রদেশের পিংলিয়াং থেকে আসা একজন গ্রামীণ শ্রমিক বহু প্রতিযোগীকে পরাজিত করে এতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তার নাম চু ইয়েন চুন। ৫০ বছর বয়সী চু ইয়েন চুন বিগত ৩০ বছর ধরে কবিতা পড়ে আসছেন।

চু ইয়েন চুন পিং লিয়াং শহরের চিংনিং জেলার একজন প্লাম্বার।

বাবার প্রভাবে ছোটবেলা থেকে তিনি কবিতা পছন্দ করতেন। মাধ্যমিক স্কুল পাস করার পর দারিদ্র্যের কারণে তাকে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বাইরে কাজের সন্ধানে যেতে হয়। টাকা উপার্জনের মন দিলেও, তিনি নিজের পছন্দের কাজ ও স্বপ্ন ছেড়ে দেননি। গভীর রাতে যখন অন্যরা ঘুমিয়ে পড়তো, তখন তিনি কবিতা পড়ছেন এবং শিখতেন। এই অভ্যাস তিনি ৩০ বছর ধরে ধরে রেখেছেন। তার ধারণা, যতবার কবিতা পড়েন ততবারই সময় ও স্থান অতিক্রম করে তিনি সেই প্রাচীন কবি’র সঙ্গে কথোপকথন করেন।

চু ইয়েন চুনের টেবিলে একটি নোটবুক আছে। নোটবুকের পাশে একটি অভিধান। কবিতা পড়তে গিয়ে কোথাও বুঝতে অসুবিধা হলে তিনি অভিধানে শব্দের অর্থ খুঁজে বের করেন।

তিনি চীনের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, একজন সাধারণ গ্রামীণ শ্রমিক, অন্যদের আইডল হতে পারে না, তবে নিজ সন্তানের জন্য আদর্শ হতে পারে। কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে তিনি বই বা কবিতা পড়েন। কাজের চাপ বেশি হলেও, কবিতা পড়ে সব ক্লান্তি দূর করা যায় বলে তিনি মনে করেন। বাবার প্রভাবে চু ইয়েন চুনের একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে চীনের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

২০১৯ সালে টিভি সেটের সামনে চু ইয়েন চুন ‘চীনের কবিতা-প্রতিযোগিতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান দেখেন। মঞ্চে প্রতিযোগীদের চমত্কার পারফরমেন্স দেখে তিনি দারুণ প্রশংসা করেন এবং তিনিও সেই মঞ্চে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে খুবই আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

নানা কারণে চার বছর পর তিনি এ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। চার বছরের মধ্যে চু ইয়েন চুনের পরিবারের সকল সদস্য অনুষ্ঠানের অনুগত ভক্ত হয়ে ওঠেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার প্রক্রিয়ায় তিনি অনেক নতুন বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হন।

‘চীনের কবিতা প্রতিযোগিতা -২০২৩’-এর ফাইনালে চু ইয়েন চুন তার কবিতার ভাণ্ডার উজার করে দেন এবং দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। চু ইয়েন চুন যেন সবাইকে জানিয়ে দিলেন যে, পরিশ্রমের পর অবশ্যই পাওয়া যাবে।

首页上一页123 3

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn