‘থিঙ্ক লাইক আ ক্রো’ তথ্যচিত্র: জ্ঞানের চেয়ে জ্ঞান শিক্ষার যোগ্যতা আরো গুরুত্বপূর্ণ
শুধু একটি রেখা আঁকলে পিঁপড়াগুলোর যাত্রা বন্ধ হয় এবং একটি বৃত্ত আঁকলে পিঁপড়ারা ভিতরে বন্দী হয়ে পড়ে। অব্যাহতভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর, বিস্ময়কর ঘটনা জানা যায়। পিঁপড়াগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই বৃত্তে বন্দী থাকার পরে একটি ‘অসংবেদনশীল’ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। শীঘ্রই এটি আর লাইনের সীমাবদ্ধ থাকে না। এটি অবাধে আসতে এবং যেতে পারে। পিঁপড়া কি ততক্ষণে স্মার্ট হয়ে যায়? না, আবার লাইন আঁকুন এবং পিঁপড়া আবারও আটকে যাবে। কিন্তু কেন?
কেন বাথটাবের পরিষ্কার জল নীল দেখায়? এটি একটি কাপে রাখলে তা কেন স্বচ্ছ দেখায়?
তথ্যচিত্রে আরো অনেক মজার ঘটনা দেখানো হয়, যা দৈনন্দিন জীবনে সবসময় দেখলেও খেয়াল করা হয়না।
প্রতি পর্বের দ্বিতীয় অংশ হলো ‘দেদেনিয়ন অ্যানিমেশন’। অ্যানিমেশনের নায়করা হলো দেদেনিয়ন নামে তিনটি কৌতূহলী শিশু, যারা বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন ধারনা দেয় এবং অবশেষে অনুশীলনের মাধ্যমে উত্তর খুঁজে পায়।
দেদেনিয়নদের প্রশ্ন ও অনুমান সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু তারা বৈজ্ঞানিক চিন্তার মৌলিক অংশ। প্রায়শই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলো এসব আপাতদৃষ্টিতে অর্থহীন চিন্তা থেকে আসে।
নইলে কত মানুষ আপেলের আঘাতে পায়, শুধু আইসাক নিউটন কেন মহাকর্ষ বল আবিষ্কার করলেন?
পর্বের তৃতীয় অংশে উপস্থাপক দর্শকদের নিয়ে মজার পরীক্ষা করেন।
উপস্থাপক ইউ ওই প্রশ্ন করেন এবং নিজেই দর্শকদের কাছে পরীক্ষাগুলো দেখান।
যেমন ধরুন, কাঁচ দিয়ে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের মোমবাতি ঢেকে রাখুন, কোনটি প্রথমে নিভে যায়? দীর্ঘটা প্রথমে, ছোটটা প্রথমে নাকি দীর্ঘ ও ছোটটা একসাথে নেভে যায়?
দর্শকরা যখন পরীক্ষার ফলাফল দেখতে আগ্রহী হয়, তখন পরীক্ষা মাঝপথে থেমে যায়। চিন্তা করার সময় দেওয়া হয়। প্রত্যেক পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হবে না।
আরেকটি মজার পরীক্ষা দেখবো। একই উচ্চতা থেকে প্লেট এবং বেলুন একই সময় ছেড়ে দিলে, প্লেটটি বেলুনের আগে মাটিতে পড়ে যাবে। কিন্তু প্লেটে বেলুন রাখলে একই সঙ্গে মাটিতে পড়ে যায় দুটি।
কেন এটা ঘটে?
এই তথ্যচিত্রটি আমাদের বলে দেয় যে, কীভাবে সমস্যা নিয়ে ভাবতে হয়, তা পর্যবেক্ষণ বা অনুমান করা, নিজ উদ্যোগে উত্তর খুঁজতে হয়, এটিই সঠিক দিকনির্দেশনা।
প্রথমত, আমাদের একটি সমস্যা বুঝতে হবে: শিশুর প্রতিভা আইকিউ’র উপর নির্ভর করে না, বরং চিন্তাভাবনার উপর নির্ভর করে। আলবার্ট আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন, ‘স্বাধীন চিন্তাভাবনা এবং স্বাধীন বিচারের সাধারণ ক্ষমতাকে সর্বদা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।’ ছোটবেলা থেকেই স্বাধীন চিন্তার অভ্যাস গড়ে তোলা শিশুদের জন্য একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘কিন্তু স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষমতা’ কী এবং আমরা কীভাবে শিশুদের চিন্তা করার ক্ষমতা তৈরি করতে পারি?’ বেশিরভাগ অভিভাবক সবসময় এমন ধরনের প্রশ্ন নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং চিন্তিত থাকেন যে, তাদের সন্তানরা চিন্তা করতে পারে না।