‘থিঙ্ক লাইক আ ক্রো’ তথ্যচিত্র: জ্ঞানের চেয়ে জ্ঞান শিক্ষার যোগ্যতা আরো গুরুত্বপূর্ণ
এটি একটি জনপ্রিয় বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টারি, যা বিশেষভাবে শিশুদের জন্য জাপানের এনএইচকে এডুকেশন চ্যানেলের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য হল শিশুদের স্বাধীন চিন্তাভাবনা গড়ে তোলা, আলোকিত করা ও শিশুদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুশীলন ও চর্চা করে দেওয়া।
যদিও এটি শিশুদের দেখার জন্য তৈরি করা হয়েছে, তবে এনএইচকের উদ্যোগে নির্মিত শিশুদের জ্ঞানার্জনের শিক্ষামূলক তথ্যচিত্রের মান সবসময়ই উচ্চে থাকে। এটি একটি আকর্ষণীয় ও মজাদার পদ্ধতিতে বিজ্ঞানকে বলে দেয় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এটি উপভোগ্যও বটে। এ তথ্যচিত্রের নাম হলো ‘Think Like a Crow!’।
এই প্রামাণ্যচিত্রের মোট ২০টি পর্ব আছে এবং প্রত্যেক পর্ব ১০ মিনিট মাত্র। প্রত্যেক ভিডিওতে তিনটি অংশ আছে এবং জাপানের বিখ্যাত অভিনেত্রী ইউ ওই ভিডিওতে উপস্থাপক হিসেবে পরীক্ষার ব্যাখ্যা করেছেন।
বিবিসি একবার প্রোগ্রামে কাকের বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞানীদের আমন্ত্রণ জানান। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কাকগুলোকে আটটি ধাপে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়।
পরীক্ষাটিকে ‘এখন পর্যন্ত প্রাণীদের জন্য পরিচালিত সবচে কঠিন বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষা’ বলে মনে করা হয়।
যাই হোক, এই খুব জটিল পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে কাকগুলোর মাত্র কয়েক মিনিট সময় লেগেছিল।
ব্রিটেনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ বার্ড বলেছেন, ‘কাকের কিছু সহজাত বুদ্ধিমত্তা এবং জটিল চিন্তা করার ক্ষমতা রয়েছে। কাক সক্রিয়ভাবে সমস্যা নিয়ে চিন্তা করতে পারে এবং পরীক্ষায় দেওয়া বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারে। একটি কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে সফল না হওয়া পর্যন্ত কাক বারবার চেষ্টা করতে থাকে ও সমস্যার সমাধান বের করে ফেলে।
কাক খুব বুদ্ধিমান পাখি এবং তারা সরঞ্জাম ব্যবহারের আগে এবং ব্যবহারের প্রক্রিয়া নিয়ে জটিল চিন্তা করতে পারে। ‘থিঙ্ক লাইক আ ক্রো’-এ, প্রতিটি পর্বে তিনটি অংশ ব্যবহার করে দেখানো হয়েছে যে, কাকগুলো কীভাবে চিন্তা করে। বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার চারটি ধাপ অর্থাত্- পর্যবেক্ষণ, অনুমান, পরীক্ষা ও মূল্যায়নের মাধ্যমে দর্শকদের কাকের মতো স্বাধীন চিন্তাভাবনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কাক কাঁচের বোতলের নীচের পানি পান করার জন্য কয়েকটি নুড়ি ব্যবহার করে।
প্রতিটি পর্বের প্রথম অংশের নাম হলো ‘পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে চিন্তা করুন’। এতে দর্শকদেরকে কিছু পরীক্ষা দেখানো হয়। পরীক্ষায় দেখানো এসব রহস্যময় ঘটনাগুলো দৈনন্দিন জীবনে মানুষ লক্ষ্য করে না। তথ্যচিত্রের পরীক্ষাগুলো দেখার পর, লোকেরা নিজেদের জীবনের নানা বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করে। তারা বলে, এই অবস্থা সর্বদা বিদ্যমান, কেন আমি তা লক্ষ্য করিনি?
একটি উদাহরণ জানাই। একটি ধাতব মুদ্রা জলে ভাসে। তবে এটিকে কাপের প্রান্তে ঠেলে দিলে দেখা যায়, এটি বার বার পানির মাঝখানে ফিরে আসে। অন্যদিকে, কাঠের একটি টুকরা বিপরীত আচরণ করে। আপনি কাপের যে কোনো দিকে কাঠের টুকরা ঠেলে দিলে, সেটি সবসময়ই কাপের প্রান্তে ফিরে আসে।
আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, যখন কাপটি জল দিয়ে ভরা হয়, তখন পরিস্থিতি উল্টে যায়। মুদ্রাটি কাপের প্রান্তে চলে যায় এবং কাঠের ব্লকটি মাঝখানে ভেসে যায়।
কিছু শারীরিক ঘটনার পাশাপাশি কিছু বিষয় রয়েছে, যা আমরা খুব কমই মনোযোগ দেই, যেমন একটি কচ্ছপের খোলস কীভাবে বৃদ্ধি পায়?