‘থিঙ্ক লাইক আ ক্রো’ তথ্যচিত্র: জ্ঞানের চেয়ে জ্ঞান শিক্ষার যোগ্যতা আরো গুরুত্বপূর্ণ
সহজভাবে বলা হয়, ‘চিন্তা করার ক্ষমতা’ মানে কারোর উদ্যোগে সেট করা একটি নির্দিষ্ট আদর্শ উত্তর খোঁজা নয়, বরং গভীরভাবে চিন্তা করার এবং সক্রিয়ভাবে উত্তর খোঁজার ক্ষমতা। স্বাধীন চিন্তার দক্ষতার বিকাশ হল শিশুদের ‘কীভাবে ভাবতে হয়’ এবং ‘কী ভাবতে হয়’ শেখানোর প্রক্রিয়া। আমরা যদি সরাসরি শিশুকে উত্তর দেই, তাহলে সময়ের সাথে সাথে শিশুর চিন্তা করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে। যখন একটি শিশু ‘ইন্ডোকট্রিনেশন লার্নিং’ নিয়ে বিরক্ত হয়, তখন ‘লার্নিং এন্ড পয়েন্ট’ এমন একটি ভীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ, যখন একটি শিশু স্কুল ছাড়ার পর তখন শিখতে অনিচ্ছুক হবে।
বর্তমানে আমাদের সন্তানরা লেখাপড়ার আরো ভাল ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রতিদিন হোমওয়ার্ক করে এবং নানা রকম ক্লাসে যোগ দিতে ব্যস্ত থাকে। তারা জীবনের নানা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে পারে কি? হয়তো পর্যবেক্ষণ করে, কোন সমস্যা হয় কি? যেসব শিশু চিন্তা করে, পরীক্ষা করে, যাচাই করে এবং সিদ্ধান্তে আসে, তারা কঠিন প্রতিযোগিতার সামনে দাঁড়াতে পারবে? আমাদের শিশুরা স্কুলে, বাড়িতে, সামাজিক শিক্ষায় ঠিক কী শিখতে চায়? জ্ঞান, দক্ষতা... সব থেকে মৌলিক জিনিস একটি বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার পদ্ধতি।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন প্রিন্সিপাল রিচার্ড লেভিন একবার বলেছিলেন, ‘সত্যিকারের শিক্ষা কোনো জ্ঞান ও দক্ষতা দেয় না। তবে মানুষকে যে কোনো শৃঙ্খলা ও পেশায় দক্ষ করে তুলতে পারে। এটাই প্রকৃত শিক্ষা।’
শিক্ষক, অভিভাবক ও প্রতিকারমূলক ক্লাস থেকে শিশুরা কীভাবে স্বাধীনভাবে শিখতে পারে, মূল বিষয় হলো স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা। ডকুমেন্টারি ‘থিঙ্ক লাইক এ ক্রো’ শিশুদের বলতে চায় যে, আপনার চোখ দিয় এই বিশ্ব পর্যবেক্ষণ করুন এবং প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন, প্রশ্ন সম্পর্কে চিন্তা করুন, অনুমান সামনে রাখুন এবং সাহসের সাথে কথা বলুন। ব্যর্থ হওয়া ঠিক আছে, পাঠ শিখুন এবং আবার শুরু করুন। এই ধাপে ধাপে প্রক্রিয়ায় বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা করতে শিখুন এবং নিজের জীবনে এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করুন। ফলে আপনি একজন ‘শীর্ষ ছাত্র’ হতে পারবেন।
এই ডকুমেন্টারির শিরোনামের মতোই, আশা করা যায় যে, দর্শকরা ‘কাকের মতো ভাবতে পারবে’ ও যুক্তিবোধ ব্যবহার করতে পারবে।
এই ডকুমেন্টারিটি দেখার পরে, কেউ বলেছিলেন, ‘আমরা যদি নিউটন হতাম, তবে আমরা আমাদের জীবনের অনেক আপেল উপেক্ষা করতাম।’ প্রকৃতপক্ষে, জীবনের ছোট ও সহজেই উপেক্ষা করার বিষয়গুলোর পেছনে বৈজ্ঞানিক তথ্য থাকে।
কাকের অল্প তথ্য আছে এবং অন্য পাখির চেয়ে তারা বুদ্ধিমান। মানুষ হিসাবে আমাদের আইকিউ সুবিধা সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞান আবিষ্কার করতে, সমস্যা সমাধান করতে এবং বিশ্বকে আরো সুন্দর করে তোলার জন্য শক্তিশালী স্বাধীন চিন্তা করার ক্ষমতা অনুশীলন করা উচিত্।
লিলি/তৌহিদ/শুয়ে