বাংলা

‘জাগতেন পা মিগ সেলভ’ প্রামাণ্যচিত্রে উন্নত দেশগুলোর সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় উন্মোচিত

CMGPublished: 2022-04-07 14:20:57
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

সম্প্রতি একটি প্রামাণ্যচিত্র সারা বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছে। এটি পিপলস ডেইলি পত্রিকা নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা মাইক্রব্লোগে পুনর্মুদ্রণ করেছে। প্রামাণ্যচিত্রের বিষয় অনেক বিস্ময়কর ও ভয়াবহ।

ডেনমার্কের এক পরিচালক স্বীকার করেন যে, ছোটবেলায় পরীক্ষার জন্য মানবশিশুদের ব্যবহার করা হয়েছিলো এবং বড় হওয়ার পর তাকে গোপনে ট্র্যাক করা হয়েছিল।

এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পেছনে অর্থদাতারা হলো যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা সিআইএ।

এ প্রামাণ্যচিত্রে যে বিষয়টি তুলে ধরা হয় তা হলো উন্নত দেশগুলোর উল্লেখ করতে অনিচ্ছুক নানা স্পর্শকাতর বিষয়।

প্রিয় বন্ধুরা, আজকের আলোছায়া অনুষ্ঠানে ‘Jagten på mig selv জাগতেন পা মিগ সেলভ’ শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্রের সঙ্গে পরিচিত হবো।

এই প্রামাণ্যচিত্রের পরিচালক পের উয়েননিক ১১ বছর বয়সে কোপেনহেগেনে সিজোফ্রেনিয়ার উপর মানব পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

পরীক্ষার নির্যাতনের মাত্রা ছিল অনেক নিষ্ঠুর ও মর্মান্তিক!

প্রথমটি হলো বৈদ্যুতিক শক পরীক্ষা।

উয়েননিককে তার শরীরে ইলেক্ট্রোড বাঁধা একটি চেয়ারে বসতে বলা হয়েছিল। ইয়ারফোন থেকে ক্রমাগত চিৎকারের আওয়াজ ভেসে আসছিল। এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য হলো আকস্মিক উদ্দীপনার অধীনে তার স্নায়ুতন্ত্রের পরিবর্তন পরীক্ষা করা।

যদি তিনি প্রচুর ঘামেন, এর মানে হলো তিনি স্বাভাবিক ও আরও সংবেদনশীল। যদি তার মেজাজের পরিবর্তন না হয় এর মানে হলো তিনি একগুঁয়ে সাইকোপ্যাথ।

তারপর হলো বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা। যেমন, ছবি দেখতে দেখতে কথা বলা। চিকিত্সক উয়েননিককে একটি ছবি দেখান, তারপর তাকে একটি গল্প বানাতে বলেন।

গল্পে তুলে ধরা যুক্তি, আকাঙ্ক্ষা, প্রেরণা এবং আরও অনেক কিছুর মাধ্যমে তার অবচেতন মনের অন্বেষণ করা যায়।

তৃতীয়তো হলো একাধিক ব্যক্তিত্ব পরীক্ষা। তিনি মিথ্যা বলছেন কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য তাকে হ্যাঁ/না দিয়ে ফর্মের একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে বলুন।

চতুর্থতো (Wechsler Intelligence Scale) ওয়েচসলার বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা। তার প্রতিক্রিয়ার সময় পরীক্ষা করার জন্য তাকে সিরিজ গেমস সম্পূর্ণ করতে বলা হয়, যেমন ধাঁধা, বিল্ডিং ব্লক এবং ‘গ্রীষ্মকালের’ সাথে সম্পর্কিত শব্দগুলো।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঠিক পরে, তাকে বেশ কয়েকটি জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য করা হয়েছিলো। এটি তরুণ উয়েননিককে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে ফেলে। তিনি এমন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাওয়া একমাত্র কিশোর না।

সেই বছর মোট ৩১১টি শিশু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তাদের দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল।

গ্রুপ A-তে মোট ২০৭টি শিশু ছিল, তাদের মা সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিলেন। তাই তাদের অসুস্থতার হার বেশি বলে মনে করা হয়।

গ্রুপ বি’র ১০৪টি শিশুর মায়েরা স্বাভাবিক ছিলেন।

কিন্তু তারা এতিমখানায় বড় হয়ে উঠেছিল, তাদের শৈশব আরও কঠিন ও কষ্টকর ছিল এবং তাদের হৃদয় আরও দুর্বল ছিল।

নির্দিষ্ট উদ্দীপনার মাধ্যমে সিজোফ্রেনিয়া প্ররোচিত হতে পারে।

চিকিত্সকেরা জানতে চান, কোন গ্রুপের শিশুরা আরো সহজেই সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়। দুর্ভাগ্যবশত, উয়েননিক গ্রুপ বি-তে ছিল। তার মা বিয়ের আগেই তাকে জন্ম দেয়। তার খুব ভালো আর্থিক অবস্থা ছিলো না। তিনি ছোটবেলা থেকেই একটি অনাথ আশ্রমে বেড়ে ওঠেন। তিনি অল্পবয়স ও অজ্ঞ হওয়ায় পরীক্ষায় দলভুক্ত হন। পাশাপাশি তিনি অর্থ উপার্জন করতে চেয়েছিলেন। প্রতিটি পরীক্ষার পরে তাকে ১৬ Krona ক্রোনা মূল্যের অর্থ দেওয়া হতো। এটি একটি অসহায় শিশুর জন্য বিরাট প্রলোভন। কিন্তু তখন যদি সে জানত, তার সাথে কি ঘটতে যাচ্ছে, তাহলে সে অবশ্যই এই সাহস করতো না।

দীর্ঘক্ষণ বৈদ্যুতিক শকের কারণে সে কিছু জরুরি স্মৃতি হারিয়ে ফেলে। প্রাপ্তবয়সে তিনি প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন যে তিনি এই মানব পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি সবসময় ভাবতেন যে, তার মনস্তাত্ত্বিক ট্রমা ও একাকী ব্যক্তিত্ব তার শৈশবে ভালোবাসার অভাবের কারণে সৃষ্টি হয়েছিল। ৩৪ বছর বয়সে তিনি দুর্ঘটনাক্রমে হাসপাতালে তার মেডিকেল রেকর্ড বই দেখেন। তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, বিষয়টি আসলে সহজ নয়।

123全文 3 下一页

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn