পরিচালক লি লু
লি লু মনে করেন, সংস্কৃতির আমদানি এবং রপ্তানি সমান হতে হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমি পশ্চিমা জগতের অনেক ভালো চলচ্চিত্র, টিভি নাটক ও সংগীত আমদানি করেছি। এখন আমাদের ভালো শিল্পকর্ম তাদেরকে দেখানো উচিত।
ডিজনির এ টিভি নাটকের কপিরাইট কেনার খবর প্রকাশের সময় এ টিভি নাটকের মাত্র এক মাস শুটিং হয়েছিলো। খবর জানার পর লি লু ও তার দল আরো মনোযোগ দিয়ে তাদের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, প্রতিটি শট, প্রতিটি লাইন, প্রতিটি দৃশ্যের একটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং বিদেশি দর্শকরা যা দেখবে তা আমাদের ভাবতে হবে।
শুটিং করার সময় লি লু সবসময়ই সবাইকে মনে করিয়ে দিতেন যে, দেশি-বিদেশি দর্শকদের চীনের ৫০ বছরের সত্যিকার উন্নয়ন দেখাতে হবে। গোটা ক্রুদের জন্য এটি নতুন চাপ ও চালিকাশক্তি।
ডিজনি’র এ টিভি নাটকের কপিরাইট নিয়ে কিছুটা সন্দেহও রয়েছে। বিদেশিরা এটি বুঝবে কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কেউ কেউ। অন্যরা মনে করছে- এতে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। কারণ সর্বোপরি, এই নাটকটি আমাদের কিছু দুঃখজনক অতীতকে চিত্রিত করেছে।
মানুষের উদ্বেগ নিয়ে লি লু বলেন, তিনি তা ভাবেন না। কারণ মানুষের আনন্দ, রাগ, দুঃখ ও সুখ, মন্দের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জয়, সুখী জীবনের প্রতি সাধনা, এ বিষয়গুলো একই।
‘অ্যা লাইফলং জার্নি’ নামে এ সিরিজের স্পষ্ট থিম হলো ভালোবাসা। ভালোবাসা যুগের পটভূমি, নাগরিকত্ব, অঞ্চল বা বর্ণের’র সঙ্গে সম্পর্ক নেই। এটি সবার হৃদয়ের কোমলতম অংশে লুকিয়ে আছে। এই ধরনের অনুভূতি অবশ্যই জাতীয় সীমানা এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্য অতিক্রম করতে পারে। এ বিষয়ে আমার কোনও উদ্বেগ নেই।
প্রকৃতপক্ষে, অনেক দেশের দুর্ভোগ নিয়ে ডিজনিতে অনেক কিছু প্রচার হয়েছে। আসলে আমাদের এই নাটকের মূল বিষয়বস্তু দুর্ভোগ নয়, বরং চীনা জনগণের সহনশীলতা ও শক্তি এবং চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের দুর্দান্ত সাফল্য। প্রাণবন্ত চরিত্রের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে চীনকে তুলে ধরা হয়েছে। চীন সম্পর্কে বিশ্বকে আরও জানানোর খুব ভাল সুযোগ এটি।
পরিচালক হিসেবে লি লু চীনাদের গল্প সারা বিশ্বকে জানানোর চেষ্টা করছেন।
আগে ‘In the name of people’ নাটক প্রচারিত হওয়ার সময় বিদেশি বংশোদ্ভূত চীনারা এবং বিদেশিরা তা পছন্দ করেন। তারা নাটকের কথোপোকথনও মুখস্থ বলতে পারতেন। তাই আমাদের চীনের সংস্কৃতি ও চীনের বাস্তব জীবন তুলে ধরার মাধ্যমে সত্যিকার ভালো বিষয়বস্তু তৈরি করতে হবে। আমাদের শিল্পকর্ম উপভোগ করার প্রক্রিয়াকে চীন স্বীকৃতি দেবে। একটি টিভি সিরিজ বা চলচ্চিত্র এবং একটি চরিত্র ও গল্প নীরবে-নিভৃতে আমাদের মূল্যবোধ ও বিশ্বাস পৌঁছে দেবে।