'চকচকে লাল তারা'-China Radio International
কিন্ত, ওয়াং কার ওয়াই এর চলচ্চিত্রটি তাদের নিয়ে নয়। বরং, 'ইন দ্য মুড ফর লাভ' নির্মিত তাদের সহজ-সরল সঙ্গী চৌ মু ইয়ুন ও সু-লি চেন তথা মিসেস ছেনকে কেন্দ্র করে, যারা দ্রুতই বিশ্বাসঘাতকতার সূত্রে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। তবু, মিস্টার চৌ-ও একজন লোক যিনি তার স্ত্রীর সাথে একটি অ্যাপার্টমেন্টে ওঠেন। আবার, মিসেস ছেনও একজন মহিলা যিনি তার স্বামীর সাথে পাশের বাড়িতে ওঠেন। তাদের ক্ষেত্রেও সময় ধীরে কাটে যখন তারা আবদ্ধ দরজা দিয়ে একে অন্যকে পাশ কাটিয়ে যান।
'ইন দ্য মুড ফর লাভ'-এ নীরবতার কোনো স্থান নেই। এমনকি নীরবতার গুরুত্ব বোঝানো দৃশ্যগুলোতেও রয়েছে সঙ্গীত অথবা চারপাশের শব্দের ব্যবহার। এতে নীরবতার স্থান না থাকার কারণ হলো- চলচ্চিত্রটির মূলে রয়েছে স্মৃতিকাতরতা। ইংরেজিতে অনুবাদ করলে চলচ্চিত্রের নাম আসলে দাঁড়ায় 'ফ্লাওয়ারি ইয়ার্স' অথবা 'দ্য এজ অফ ব্লসম', যা নির্দেশ করে 'ইন দ্য মুড ফর লাভ' তৈরি হয়েছে স্মৃতিকাতরতার উপর ভিত্তি করে।
শুরুতে 'ইন দ্য মুড ফর লাভ' এর গল্প লেখা হয়েছিল 'দ্য স্টোরি অফ ফুড' হিসেবে। অতীতের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হলো সেই সময়ের খাবার। এ কারণে, স্মৃতিকাতরতার বহিঃপ্রকাশে খাবার অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গোটা চলচ্চিত্র জুড়ে আমরা দেখতে পাই মূল চরিত্রগুলো খাচ্ছেন, খাবার তৈরি করছেন অথবা খাবার কিনছেন। বিখ্যাত 'করিডোর গ্ল্যান্স' সিকোয়েন্স বাদে খাবার নিয়ে প্রতিটি দৃশ্য দর্শকদের সেই সময়কার খাদ্য সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
চলচ্চিত্রটির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য কোনো না কোনোভাবে খাবারের সঙ্গে জড়িত। খাবার অন্তরঙ্গতার একটি পথ এবং একইসাথে একজনের খাদ্যাভ্যাস সেই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয় যা আমরা দেখেছি সু-লি চেন ও চৌ মু-ইয়ুন যখন তাদের সঙ্গীদের পরকীয়ার কারণ সন্ধান করতে শুরু করে তখন। আবার, এই দুজন নিজেদের আবদ্ধ ঘরে বসে থাকাকালে একাকিত্বের সম্মুখীন হলে এর থেকে বাঁচার পথ হিসেবে যখন খাবার আনাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে একে অন্যের সাথে সাক্ষাৎ করেন, তার মাধ্যমেও আমরা দেখেছি চলচ্চিত্রে খাবারের গুরুত্ব।