সিরিয়ার ফটোগ্রাফার মালাস-China Radio International
শরত্কালের এক দুপুরে সিরীয় আলোকচিত্রকর ওমর মালাস আগের মতোই ভবনের ছাদে গিয়ে ক্যামেরা দিয়ে দামেস্কের ক্যাসিওন পাহাড়ের নিচে একটি আবাসিক এলাকার ছবি তুলছিলেন।
৩৮ বছর বয়সী মালাস ফ্রান্সে চলচ্চিত্র তৈরি করা শিখেছেন। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের আগে তাঁর কাজ ছিলো সিরিয়ার ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করা। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি সিরিয়ায় অবস্থান করেন এবং রাজধানী দামেস্কের একটি আবাসিক ভবনের উপর তলা ভাড়া নেন। তিনি প্রায়ই ছাদ থেকে শহরের দিকে তাকিয়ে থাকতেন এবং ক্যামেরা দিয়ে যুদ্ধের সময় সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রা রেকর্ড করতেন।
মালাস নিজেকে কাকের সঙ্গে তুলনা করতেন। তিনি মনে করেন, দামেস্কের এই সাধারণ পাখির সঙ্গে তার অনেক মিল রয়েছে। আমরা উপর থেকে পর্যবেক্ষণ করি। কাক খাবার বাছাই করে এবং আমি ছবি বাছাই করি। সিনহুয়া বার্তা সংস্থার সাংবাদিককে এভাবেই বলেন মালাস।
কয়েক বছর আগেও মালাস তার ছাদে বসে কাকের মতো দামেস্ক শহরের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করতেন এবং অসংখ্য ছবি তুলতেন। তিনি এসব ছবি বইয়ের আকারে সংকলন করবেন এবং এটি ‘কাকের চোখ’ নামে প্রকাশ করবেন।
কাক সম্পর্কে এই অ্যালবামে মালাস যুদ্ধের ছায়ায় বাস করা দামেস্কবাসীর জীবন তুলে ধরেছেন। যেমন, শীতের সকালে ত্রাণ সরবরাহ নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো পুরুষ, রাস্তার বেঞ্চে রাত কাটানো গৃহহীন মানুষ, ফল ও সবজির স্টলের পাশে অপেক্ষা করা বৃদ্ধ ও শিশু, দেয়ালের পাশে ভিক্ষুক, গ্রামের পশুপালক, রাস্তার পাশে চুপচাপ বসে থাকা মা ও ছেলে...।
এসব শিল্পকর্মে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাধারণ সিরীয় জনগণের বাসস্থানের ক্রম অবনতির অবস্থা প্রতিফলিত হয়েছে। ঘন ঘন যুদ্ধ, নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর সংক্রমণ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে স্থানীয় জনগণের জীবন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে। পণ্যের অভাব এবং তেল ও গ্যাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অনেক তরুণ-তরুণী বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।