দ্য ইল-China Radio International
প্রতিযোগিতার পর সাংবাদিকরা এরিকের কাছে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অনুভূতি জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কখনই এত বড় সুইমিং পুল দেখি নি। আমি সত্যিই ভয় পেয়েছি।’
এরিকের গল্প খুব দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। জনগণ তাকে ‘দ্য ইল’ বলে ডাকেন। এরিক খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন স্পনসর তার জন্য হাজির হয় এবং সংবাদদাতারা চলে আসেন। ক্যামেরার সামনে তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, এথেন্স অলিম্পিক, আমার জন্য অপেক্ষা করো।
অবশ্য, তখনও তিনি বুঝতে পারেন নি যে, সিডনি অলিম্পিক হলো তার প্রথম ও শেষ অলিম্পিক।
আসলে এরিকের সিডনির যাত্রা ছিল আকস্মিক ঘটনা। সে বছর আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি একটি দারিদ্র্যবিমোচনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হলো ক্রীড়া খাতের অনুন্নত দেশগুলোর খেলোয়াড়দের অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া।
সারা বিশ্বের সবচে অনুন্নত দেশ হিসেবে নিরক্ষীয় গিনি অলিম্পিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। তখন মাত্র ২০ বছর বয়সী এরিক রেডিওতে এই খবর শুনে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করেন।
তিনি ভাবছিলেন, ‘অলিম্পিকের মাধ্যমে কমপক্ষে আমি বিদেশে যেতে পারবো। আমি বিদেশ দেখতে চাই।’
সে বছর মাত্র সাত লাখ মানুষের আফ্রিকার সেই দেশে একটিও স্ট্যান্ডার্ড সুইমিং পুল ছিলো না। কেউ সত্যিকারভাবে সাঁতার কাটতে পারত না। তাই একমাত্র তিনিই তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।
তারপর আরেকটি জরুরি সমস্যার সমাধান করতে হয়। তিনি সাঁতার কাটতে পারতেন না, প্রশিক্ষণের জায়গা ছিলো না, তার কোনো কোচও ছিলো না। সিডনি অলিম্পিক উদ্বোধনের আর মাত্র কয়েক মাস সময় বাকি ছিলো!
অনেক চেষ্টার পর তিনি একটি হোটেল খুঁজে পেলেন। সেই হোটেলের খুব ছোট একটি সুইমিং পুল আছে এবং এর দৈর্ঘ্য মাত্র ২০ মিটার। সুইমিং পুলের কর্মকর্তারা প্রতিদিনের ভোর ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত সেখানে এক ঘণ্টা সাঁতার কাটার অনুমতি দেন।