দ্য ইল-China Radio International
আরো খারাপ বিষয় হলো, নিরক্ষীয় গিনি’র ক্রীড়া ব্যুরোর কর্মকর্তা তাকে জানালেন যে, তিনি পুরুষদের ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলের প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছেন। তিনি পানিতে বেশিক্ষণ থাকতে পারেন না। একটানা শ্বাস ধরে রেখে ৫০ মিটার সাঁতার শেষ করতে পারেন। কিন্তু প্রতিযোগিতার আগ মুহূর্তে তিনি জানতে পারেন যে, ৫০ মিটার নয়- তাকে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল প্রতিযোগিতায় লড়তে হবে। যেহেতু নিরক্ষীয় গিনি প্রথমবারের মতো অলিম্পিকের সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, তাই এই ভুল হয়েছে।
দারুণ হতাশায় এরিক টেকঅফ প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ালেন। বন্দুকের আওয়াজ হলো; এরিকের সঙ্গে অন্য দু’জন প্রতিযোগী উত্তেজিত হয়ে বন্দুকের শব্দের আগেই সুইমিং পুলে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাই তারা অযোগ্য বলে গণ্য হন। এরপর স্টেডিয়ামের ১৭ হাজার দর্শকের দৃষ্টি এরিকের ওপর পড়ে।
পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার পর দর্শকেরা দেখতে পারেন যে, এই প্রতিযোগী অন্যদের চেয়ে একটু ভিন্ন রকম। তার সাঁতারের ধরণও অসংযত; এমনকি তিনি ঠিকমত শ্বাস নিতে পারছেন না, তাই তার মাথা সবসময়ই পানির ওপরে রাখছেন। প্রথম ৫০ মিটার তিনি সুষ্ঠুভাবে শেষ করেন, তবে শেষ ৫০ মিটার তিনি করবেন? এখন পর্যন্ত তিনি কখনও ১০০ মিটার সাঁতার কাটেন নি। স্টেডিয়ামের ভাষ্যকার দর্শকদের বিষয়টি বুঝিয়ে দেন। সবাই যেন মুহূর্তে মুগ্ধ হয়ে যায়। দর্শকেরা আর হাসছেন না, তারা দাঁড়িয়ে এরিককে উত্সাহ দেওয়া শুরু করেন।
আস্তে আস্তে, ২০ মিটার, ১৫ মিটার, ১০ মিটার, ৫ মিটার— এভাবে বাকি ৫০ মিটারও সাঁতরে যান এরিক।
এটি হলো এরিকের জীবনে প্রথমবারের মতো ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার। কেউ কল্পনা করতে পারেন নি যে, জীবনের প্রথম ১০০ মিটার সাঁতার কেউ একজন অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এসে সম্পন্ন করতে পারে!
১ মিনিট ৫২.৭২ সেকেন্ড! তিনিই তাঁর গ্রুপের প্রথম, কারণ তার গ্রুপে মাত্র তিনি একাই ছিলেন। এটি হলো অলিম্পিকের ইতিহাসে পুরুষদের ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলের সবচেয়ে ধীর গতির রেকর্ড। ২০০ মিটারের বিশ্বরেকর্ডের চেয়েও যা ৭ সেকেন্ড কম। এটি নিরক্ষীয় গিনির সবচে ভালো ফলাফল। তবে, এই ফলাফল দিয়ে ফাইনাল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন নি এরিক।