নতুন যুগে ‘মূল ধারার’ চলচ্চিত্রের ঐতিহাসিক ভূমিকা-China Radio International
৮০’র দশকের পর ‘মূল সুর’ এই শব্দ আবারও ফিরে আসে। তখনকার উদ্দেশ্য ছিল বুর্জোয়া শ্রেণির উদারনীতি ঠেকানো। তাই সে সময় চলচ্চিত্র রচনার প্রধান লক্ষ্য ছিল স্বদেশের মহান সংস্কারের সঙ্গে সমন্বয় ঘটানো এবং চলচ্চিত্র ব্যক্তিদের মূল্যবোধ জাগ্রত করা। সে সময় মূল সুরের চলচ্চিত্রের জন্য নানা চেষ্টা করা হতো। দর্শকদের কাছে সুপরিচিত ইতিহাসবিষয়ক ফিল্ম ছাড়াও, আরো থাকতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের ঘিরে তৈরি বায়োপিক চলচ্চিত্র এবং সাধারণ পারিবারিক মূল্যবোধ ও সামাজিক নীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের চলচ্চিত্র।
একবিংশ শতাব্দীতে চলচ্চিত্র বাণিজ্যিক জগতে পা রাখে। একের পর এক বেসরকারি চলচ্চিত্র কোম্পানি উঠে আসে। মূল সুরের চলচ্চিত্র অবশেষে রাজনৈতিক দাসত্বের বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। বাণিজ্যিক বাজারকে প্রধান অবস্থান হিসেবে চলচ্চিত্র উন্নয়নের নতুন সুযোগ সামনে আসে।
যদিও মূল সুরের মুভিটি পরিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক চলচ্চিত্রের মতো নয়, তবে এর রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য উপেক্ষা করা যায় না। জাতীয় আদর্শ তুলে ধরে প্রয়োজনীয় সময় সরকারি বিভাগের প্রচার মুখপাত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় এমন চলচ্চিত্র। তবে আগের সুগভীর রাজনৈতিক বিষয়ের চলচ্চিত্রের তুলনায় বর্তমানে মূল সুরের চলচ্চিত্রগুলো আরো বেশি বাজারায়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে অনেকে ‘মূল সুর’ শব্দটি ছেড়ে দিয়ে ‘নতুন ধারা’ শব্দটি ব্যবহার করা শুরু করেন। আধুনিক যুগে ‘নতুন ধারার’ চলচ্চিত্র আসলেই জনগণের পছন্দের, মূল মূল্যবোধ, যুগের বৈশিষ্ট্য ও ভাবমূর্তি তুলে ধরে এসব চলচ্চিত্র। আগের ‘মূল সুরের’ চলচ্চিত্রের তুলনায় বর্তমান ‘নতুন ধারার’ চলচ্চিত্রে নানা পরিবর্তন ঘটেছে।
প্রথমত, ‘মূল ধারার’ চলচ্চিত্রের বিষয় আরো বৈচিত্র্যময় ও বিস্তৃত হয়ে উঠেছে। ‘মূল ধারার’ চলচ্চিত্রের বিষয় যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সীমাবদ্ধ না, বরং সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও উজ্জ্বল সাফল্যের বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্র তৈরি হয়। যেমন, বন্যা প্রতিরোধ করা, ভূমিকম্প, দুর্যোগ থেকে উদ্ধার, মহামারী প্রতিরোধ, অলিম্পিক, ক্রীড়া ও শিল্প সৃষ্টি প্রভৃতি। এসব বিষয় ‘নতুন মূল ধারার’ চলচ্চিত্রের প্রধান গল্পে পরিণত হয়।
