নতুন যুগে ‘মূল ধারার’ চলচ্চিত্রের ঐতিহাসিক ভূমিকা-China Radio International
হয়তো অনেকেই জিজ্ঞাস করতে পারেন যে, মূল সুর বা মূল ধারা মানে কি? এই শব্দ কোথা থেকে এসেছে?
‘মূল সুর’ শব্দটি আসলেই সংগীত-সম্পর্কিত শব্দ। শুরুতে মূল সুরের চলচ্চিত্রের বিষয়গুলো খুব সীমিত ছিলো। সে সময় ডোমেস্টিক চলচ্চিত্র শুরু হয়। ১৯৭৯ সালে সভ্যতা ও শিল্প মহলের যৌথ প্রতিনিধি সম্মেলনে তেং সিও পিং বলেন, সভ্যতা ও শিল্প রচনায় সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা দিয়ে জনগণকে শিক্ষা দেওয়া এবং উত্সাহ দেওয়া উচিত্। পুরোপুরিভাবে মানবজাতির বুদ্ধি দিয়ে প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক চলচ্চিত্র তৈরি করা উচিত্। তখন থেকে চলচ্চিত্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো জানায়, তেং সিও পিংয়ের কথা আমাদের চলচ্চিত্র তৈরির মূল সুরে পরিণত হওয়া উচিত্।
১৯৮৭ সালে দেশব্যাপী ফিচার ফিল্ম তৈরির সম্মেলনে চলচ্চিত্র ব্যুরো বহুবার ‘মূল সুর লালন করা এবং বৈচিত্র্যে অবিচল থাকার’ শ্লোগান উত্থাপন করে। তখন থেকে ‘মূল সুর’ এই শব্দটি চীনের চলচ্চিত্র রচনার ক্ষেত্রে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ‘মূল সুর’ শব্দটি চলচ্চিত্র খাতে উত্থাপনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এর অর্থ পরিবর্তিত হয়েছে।
চীনা চলচ্চিত্র উন্নয়নের শুরুতে ‘মূল সুর’-এর ধারণা ছিলো না। তখনকার সমাজ স্থিতিশীল ছিলো না বলে চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কণ্ঠ প্রকাশের চ্যানেল হয়ে ওঠে। তাই তখনকার গল্পগুলো প্রধানত ঐতিহাসিক ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়। যেমন, বামপন্থি চলচ্চিত্র, জাপান-বিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তৈরি চলচ্চিত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্মিত চলচ্চিত্র প্রভৃতি।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর চলচ্চিত্র শিল্প নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করে। সেই সময় বিপ্লবের ইতিহাস ও বাস্তবতা তুলে ধরে ব্যাপক শিল্পকর্ম দর্শকদের সামনে হাজির হয়। তবে, তখনকার চলচ্চিত্র তৈরিতে প্রধানত রাজনৈতিক প্রচারণাকে গুরুত্ব দেওয়া হতো। ১৯৫৬ সালে চেয়ারম্যান মাও চ্যে তোং ‘শত ফুল ফুটতে দাও’ চিন্তাধারা উত্থাপন করেন। চলচ্চিত্র ব্যুরো এ চিন্তাধারার ভিত্তিতে সংস্কার চালায় এবং ইতিবাচক সাফল্য অর্জন করে। চলচ্চিত্রের বার্ষিক সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধির পাশাপাশি, চলচ্চিত্রের মতাদর্শগত ও শৈল্পিক মান বৃদ্ধি পায়। তবে, ১৯৬৬ সালে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পাশাপাশি চলচ্চিত্র খাতে আরেকবার অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
