আইল্যান্ড কিপার-China Radio International
সম্প্রতি ‘Island Keeper’ মুভিটি গোটা চীনে প্রদর্শিত হয়েছে। এ চলচ্চিত্রটি জনগণের আদর্শ হিসেবে পরিচিত কমরেড ওয়াং চি ছাই’র কাহিনী অবলম্বনে তৈরি হয়। এতে ওয়াং চি ছাই এবং তার স্ত্রী ওয়াং শি হুয়া টানা ৩২ বছর ধরে খাই শান দ্বীপ পাহারা দেওয়ার সত্যিকারের গল্প তুলে ধরে। এতে স্বামী ও স্ত্রীর ভালোবাসা, বাবা ও সন্তানের ভালোবাসা এবং কমরেডস ইন-আর্মসের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশিত হয়।
মৃত্যুর আগে ওয়াং চি ছাই চিয়াংসু প্রদেশের কুয়ান ইউন জেলার খাই শান দ্বীপের মিলিশিয়া পোস্টের প্রধান ছিলেন। ১৯৮৬ সালের ১৪ জুলাই তিনি স্ত্রীকে না জানিয়ে খাই শান দ্বীপ তদারক করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। রাতে প্রবল বাতাস দ্বীপের ওপর আঘাত হানতে শুরু করে। দ্বীপটিতে নামার আগে চার দফায় মোট ১০জনেরও বেশি মিলিশিয়া দ্বীপ তদারকির কাজ করেছিল। তবে সর্বোচ্চ ১৩ দিনের বেশি সেখানে কেউ থাকতে পারেন নি।
৩০ অগাস্ট ওয়াং শি হুয়া খাইশান দ্বীপে নামেন এবং তার ‘নিখোঁজ’ স্বামীকে খুঁজে বের করেন। অবশেষে তিনি সেখানে আসেন এবং পুরো শরীরে দুর্গন্ধযুক্ত স্বামীকে খুঁজে পান। পুরো শরীরে দুর্গন্ধযুক্ত স্বামীকে খুঁজে পান। স্বামীকে দেখে স্ত্রীর চোখের পানি চলে আসে। তিনি স্বামীকে বলেন, আমার সঙ্গে বাসায় চলো। অন্যরা দ্বীপের তদারক করে না, আমরাও করবো না।
মূল ভূখণ্ড থেকে খাই শান দ্বীপের দূরত্ব ১২ নটিক্যাল মাইল। দ্বীপটি হলো মাতৃভূমির পূর্ব সামুদ্রিক দরজা। দ্বীপটির আয়তন দুটি ফুটবল মাঠের সমান। যুদ্ধের সময় এ দ্বীপ সমুদ্র ফাঁড়ি ও কৌশলগত ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই এটি অবশ্যই তদারক করতে হয়। ওয়াং চি ছাই স্ত্রীকে বলেন, ‘তুমি চলে যাও, আমি একা এখানে থাকতে চাই।’
এক মাস পর স্ত্রী ওয়াং শি হুয়া শিক্ষকের কাজ ছেড়ে দেন এবং মেয়েকে শাশুড়ির দায়িত্বে তুলে দেন। তিনি লাগেজ নিয়ে আবারও দ্বীপে চলে যান। তারপর ওয়াং চি ছাই জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দ্বীপটি তদারক করেন এবং স্ত্রী তার দেখাশোনা করেন। ৩২ বছরে একটি জলের ভাণ্ডার, তিনটি কুকুর, চারটি নেভিগেশন আলো, বাতাসের কারণে দশ-বারোটি আঁকাবাঁকা গাছ এবং দু’শতাধিক পুরানো জাতীয় পতাকা ছিল তাদের জীবনের সঙ্গী।