রাশিয়ার চলচ্চিত্র ও রুশ চলচ্চিত্র বাজার-China Radio International
অ্যালেক্সাজান্তার দেরাংক নামে একজন সাংবাদিকের ১৯০৮ সালে নির্মিত ‘Stepan Razin’ হলো রাশিয়ার সবচে পুরানো চলচ্চিত্র। সে সময় রাশিয়ার অধিকাংশ চলচ্চিত্র বিভিন্ন সাহিত্য অনুযায়ী তৈরি হতো। তবে তখনকার প্রযুক্তিগত সুবিধা ও আবন্ধ পরিবেশের কারণে রুশ চলচ্চিত্রগুলো খুব একটা জনপ্রিয়তা পায় নি।
১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লবের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে ফেডারেল সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রজাতন্ত্রের নেতা লেনিন চলচ্চিত্রের সামাজিক প্রভাবের ওপর গুরুত্বারোপ করতেন। দেশীয় উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত মুভি স্টুডিও চলচ্চিত্র শিল্প নিয়ন্ত্রণ করতো। সে সময় দেশটিতে বিশ্বের প্রথম চলচ্চিত্র স্কুলও প্রতিষ্ঠিত হয়। এর বর্তমানে নাম- মস্কো জাতীয় চলচ্চিত্র একাডেমি।
১৯২৫ সালে নির্মিত ‘Bronenosets Potemkin’ নামে চলচ্চিত্রটি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বিশেষ মর্যাদা ধারণ করে। কারণ, চলচ্চিত্রটির পরিচালক সার্গেই এম এইসেস্টেইন এ চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো মন্তেজ নামক সম্পাদনার পদ্ধতি প্রয়োগ করেন।
২০ শতকের ৩০ দশকে সবাক চলচ্চিত্রের জন্ম হয়। ১৯৩৪ সালে প্রথমবারের মতো সোভিয়েত ইউনিয়নের লেখকদের প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ‘সমাজতান্ত্রিক বাস্তব্বাদ’ সৃষ্টির উপায় তুলে ধরা হয়। এক্ষেত্রে ভ্যাসিলেভ ব্রাদার পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলোর মাইলফলক তাত্পর্য রয়েছে। তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়নের চলচ্চিত্রের ঐতিহাসিক ঘটনা, সমাজতান্ত্রিক নির্মাণ ও জনগণের জীবনের প্রতিফলন বেশ গুরুত্ব পায়। তাই সেসময়, সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর চলচ্চিত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল।
জার্মানির সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের যুদ্ধের কারণে সেদেশের চলচ্চিত্র ১০ বছরের মন্দা শুরু হয়। ১৯৫৩ সালে পরিবর্তন শুরু হয়। নতুন প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতারা বিভিন্ন মতবাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের চেষ্টায় ৬০ ও ৭০ দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের চলচ্চিত্রে সোনালি সময় শুরু হয়। যেমন, ভেনিস মেমোরিয়াল পুরষ্কার অর্জনকারী চলচ্চিত্র হলো- ‘The Dawns Here Are Quiet’, অস্কার শ্রেষ্ঠ বিদেশি চলচ্চিত্র ‘War and Peace’ এবং ‘Moscow Does Not Believe in Tears’। সোভিয়েত ইউনিয়নের এ চলচ্চিত্রগুলো ইউরোপের তিনটি চলচ্চিত্র উত্সবে বড় পুরস্কার লাভ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার আগ্ পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী, সুষ্ঠু পরিচালনা-ব্যবস্থা ও মুনাফা অর্জনের দক্ষতাসম্পন্ন জাতীয় চলচ্চিত্রশিল্প বিদ্যমান ছিলো।