চীনে বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর যেভাবে দর্শকদের চাহিদা মেটাতে পারে
বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরের সংগ্রহ অধিকাংশই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মূল বিষয়ের সাথে জড়িত। নানচিং নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে বাইজি ডলফিনের নমুনা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সংগ্রহ। এ সম্পর্কে জাদুঘরের প্রধান তাই চিয়ান হুয়া বলেন, বর্তমানে বিশ্বে মোট ৪০টি বাইজি ডলফিনের নমুনা রয়েছে। আমাদের জাদুঘরে ৫টি নমুনা এবং তাদের কঙ্কালের নমুনা ও পেশীর নমুনা রয়েছে। নানচিং নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ে এতো বেশি বিরল প্রাণী ও উদ্ভিদের নমুনা সংশ্লিষ্ট গবেষণার বিভাগের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৫৬ সালে নানচিং শহরের জেলেরা একটি ‘অদ্ভুত’ মাছ ধরেন। কেউ এ মাছের নাম জানতেন না। ফলে, তারা এ ‘অদ্ভুত’ মাছ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান একাডেমির অধ্যাপক চৌ খাই ইয়া প্রচুর গ্রন্থ ও দলিল ঘাটাঘাটি করে জানতে পারেন যে, এ ‘অদ্ভুত’ মাছের নাম বাইজি ডলফিন। অধ্যাপক চৌ চীনের সিটাসিয়ান গবেষণার প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম, যিনি গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর সর্বপ্রথম জলজ প্রাণীদের নিয়ে গবেষণাকাজ শুরু করেন। তিনি পরে বাইজি ডলফিনের বিশেষ বিভাগ স্থাপন করেন। তাঁর উদ্যোগে শ্রেষ্ঠ ও বিরল প্রজাতির জলজ প্রাণীদের বিশেষ সংরক্ষণ এলাকা নির্মাণ করা হয় এবং পরে চীনের চানচিয়াং শহরের লেইচৌ উপগাসরে চীনা বাইজি ডলফিন সংরক্ষণ এলাকা নির্মিত হয়, যা চীনের বিরল ডলফিন ও সিটাসিয়ানের সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে।
বস্তুত, চীনের বিভিন্ন এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরগুলো দেশপ্রেমের চেতনা ও গল্প আর বৈশিষ্ট্যময় উচ্চশিক্ষার ইতিহাসে সমৃদ্ধ। যেমন, নানচিং বিমানচালনা ও মহাকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ হাজার বর্গমিটারের তৃণভূমিতে চীনের তৈরি কয়েক ধরনের জঙ্গিবিমান প্রদর্শন করা হচ্ছে। এখানে মার্কিন আগ্রাসন-বিরোধী ও উত্তর কোরিয়াকে সাহায্য করার যুদ্ধে ব্যবহৃত মিগ-১৫ জঙ্গিবিমান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় মানুষবিহীন আকাশযান ছাংখং-১ রয়েছে এখানে। মিগ-১৫ যুদ্ধে ব্যবহৃত জঙ্গিবিমান। এটি গত শতাব্দীর ৪০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের ডিজাইন করা প্রথম ব্যাচের জেট জঙ্গিবিমান। সে সময় এ জঙ্গিবিমান সবচেয়ে বেশি উত্পাদিত হয়েছিল। এ সম্পর্কে নানচিং মহাকাশ ও নভোযান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স একাডেমির উপপ্রধান অধ্যাপক চেং সিয়াং মিং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধ চলাকালে চীনা নৌবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত মিগ-১৫ জঙ্গিবিমান মোট ৩৩০টি মার্কিন বিমান বিধ্বস্ত করে এবং ৯৫টি মার্কিন বিমানকে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম হয়। চীনের হ্যনান প্রদেশের ইয়ু অপেরার শিল্পী ম্যাডাম ছাং সিয়াং ইয়ু ১৭০টি অপেরা প্রদর্শনের আয় সংগ্রহ করেন এবং নিজের সিডান গাড়ি বিক্রি করে দেশের জন্য একটি মিগ-১৫ জঙ্গিবিমান কিনেছিলেন।