টানা ৩২ বছর ধরে ৪২০ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে অর্থ-সহায়তা দিয়েছেন লি ই ফেই
একই বছর ইয়ুননান প্রদেশে ‘আশা প্রকল্প’ চালু হয়। স্থানীয় দরিদ্র শিশুদের সহায়তায় হানি জাতি ও ই জাতির অধ্যুষিত হংহ্য জেলা সর্বপ্রথমে ‘আশা প্রকল্প’ থেকে উপকৃত হয়। জেলার ৩০০০ জনেরও বেশি শিশু সংশ্লিষ্ট আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। লাংথি জেলার নিয়াংপু প্রাথমিক স্কুলের হানি জাতির ছেলে মা খ্য ইয়াং তাদের মধ্যে একজন। জনাব লি ই ফেই’র সহায়তায় ছেলে প্রাথমিক স্কুলের পড়াশোনা সম্পন্ন করে।
তখন থেকে তিনি প্রতিবছর নিজের বেতন থেকে দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের সহায়তা দিতে শুরু করেন এবং প্রত্যেক বাচ্চাকে চিঠি লিখতে থাকেন। চিঠিতে তাদের ফেরত চিঠির ডাকটিকিটও যুক্ত করতেন। এতে বাচ্চারা সহজে ফিরতি চিঠি লিখতে পারতো। চিঠিতে জনাব লি জানতেন বাচ্চাদের বিভিন্ন চাহিদার কথা। তিনি তাদের চাহিদা পূরণ করতেন। প্রত্যেক বাচ্চাকে নতুন ব্যাগ পাঠাতেন এবং ব্যাগের মধ্যে পেন্সিল কেস, নোটবুক, অভিধান, রুলারসহ বিভিন্ন স্টেশনারি দ্রব্য থাকতো।
বস্তুত, যুবকালে কাজের জন্য কটিদেশীয় মেরুদণ্ডের আঘাত পেয়েছেন জনাব লি ই ফেই। তখন দ্বিতীয় ডিগ্রি অক্ষম শ্রমিক হিসেবে তার নাম তালিকাভুক্ত হয়। টানা বহু বছর ধরে তিনি কেবল কটিদেশীয় সমর্থনের সহায়তায় হাঁটতেন। যখন ইয়ুননান প্রদেশের যুবক তহবিলের তদারকি কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করছিলেন, তখন মেরুদণ্ডের ব্যথা সহ্য করে ৩০টি জেলার ৮০টি উপজেলার ১৪৫টি গ্রামীণ স্কুল পরিদর্শন করেন তিনি।
ইয়ুননান প্রদেশের আশা প্রকল্পের অর্থ-সহায়তা পদ্ধতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে, জনাব লি ই ফেই প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অর্থ প্রদানের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহায়তা দিতে শুরু করেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি বিশেষভাবে ইয়ুননান চীনা চিকিত্সা ও মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছিলেন। জনাব লি-র বাড়িতে ৩টি বড় কাগজের বক্স রয়েছে, যাতে দরিদ্র শিক্ষার্থী ও তাদের পিতামাতাদের দেওয়া সহস্রাধিক চিঠি রয়েছে। জনাব লি প্রতিটি চিঠির নম্বর দিয়েছেন এবং তাঁর সহায়তাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত পরিচয় রেকর্ড করেছেন। ইয়ুননান যুবক তহবিলের কর্মী চাও ক্য মান বলেন, ‘জনাব লি’র এসব চিঠির মাধ্যমে ইয়ুননান প্রদেশের আশা প্রকল্প উন্নয়নের ইতিহাস জানা যাবে।’