চীনের চিয়াংসু প্রদেশে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা সম্ভব হচ্ছে যাদের দানে
চলতি বছর তাঁরা একসাথে ইউয়ুননান প্রদেশ ভ্রমণ করেছেন। তখন স্থানীয় পশুপালকের এক বাচ্চার সাথে পরিচয় হয় তাদের। ছেলেটির কাপড় বেশ পুরনো ছিল। তাঁরা ছেলের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুবিধার্থে তাকে ৮৮০০ ইউয়ান দান করার সিদ্ধান্ত নেন। জনাব ল্যুর দৃষ্টিতে যথাযথভাবে দরিদ্র পরিবারের বাচ্চাদের সহায়তা দেওয়া বেশ তাত্পর্যপূর্ণ ব্যাপার। ১৯৮৩ সালে তিনি নানচিং শহরে পড়াশোনা করেছেন, তখন মাসিক খরচ ৩০ ইউয়ান ছিল। তার বাবা একজন কাঠমিস্ত্রী ছিলেন। মাসিক আয় ছিল মাত্র ২০ ইউয়ানেরও কিছু বেশি। তার পরিবারে আরও ৫ জন ভাই-বোন ছিল। তারা বাসায় কিছু টাকা পাঠাতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় ল্যু খেয়াল করতেন যে, ক্লাসের অন্য সহপাঠীদের কাপড়চোপড় বেশ দামি। তিনি বাবাকে চিঠি লিখে ৪০ ইউয়ানের একটি স্কি কাপড় কেনার আগ্রহ দেখান। জনাব ল্যু এ অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেন, ‘বাবা আমার চিঠির জবাব দিলেন এবং সাথে ৮০ ইউয়ান পাঠালেন। চিঠিতে বাবা লেখেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র শুকরটি জবাই করে তা ১২০ ইউয়ানে বিক্রি করা হয়েছে। ৮০ ইউয়ান তোমার পড়াশোনার খরচ। বাকি ৪০ ইউয়ান দিয়ে তুমি স্কি কাপড় কিনতে পারো’।” চিঠি পড়ে জনাব ল্যুর চোখে পানি এলো। ঘটনাটি তাঁর মনে গভীর দাগ কাটে। তখন থেকে তিনি আর বাবা-মায়ের কাছে টাকা চাননি এবং নিজেই বাবা হওয়ার পর কন্যাকে বলেন, যদিও পরিবারে আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভালো, তবে অযথা অর্থ ব্যয় করা চলবে না।
জনাব ল্যু আশা করেন, দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা স্নাতক হওয়ার পর সাহসের সাথে বিশ্বের সামনে দাঁড়াবে। এটা জরুরি। তাদের চরিত্রগঠনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের আর্থিক অবস্থা দুর্বল হলে মন ছোট করার কিছু নেই। স্নাতক হওয়ার পর যদি ভালো চাকরি পাওয়া যায়, তখন অযথা অর্থ ব্যয় করাও ঠিক না।
জনাব ল্যুর আশেপাশে আরও অনেক বন্ধু তাঁর মতো দান করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, দরিদ্র বাচ্চাদের সহায়তা করতে পারলে মনে বেশ আনন্দ পাওয়া যায়। এটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাত্পর্যপূর্ণ ব্যাপার।
সিনো আলো ছাত্রঋণের জন্য আবেদন করতে চাইলে শিক্ষার্থী সরাসরি নিজেই করতে পারেন। প্রতি বছরের অগাস্ট মাসে সংশ্লিষ্ট ছাত্রঋণ বিতরণ করা হয়। প্রত্যেকের জন্য ৫০০০ ইউয়ান। চলতি বছর চিয়াংসু প্রদেশের ছাত্রছাত্রীরা যদি তাদের কাওখাও পরীক্ষার স্কোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পূর্বশর্ত পূরণ করতে পারে এবং তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা দুর্বল থাকে, তবে তাঁরা ছাত্রঋণের জন্য আবেদন করতে পারবে। অনাথ, পরিবারে বাবা-মা গুরুতর রোগে আক্রান্ত, বা প্রতিবন্ধীরাও সংশ্লিষ্ট ছাত্রঋণের জন্য আবেদন করতে পারে।