চীনের চিয়াংসু প্রদেশে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা সম্ভব হচ্ছে যাদের দানে
জনাব স্যু ৩ বছর আগে দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি মনে করেন, তার শরীর-স্বাস্থ্য ভালো; তাকে ওষুধের পেছনের বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় না। তিনি মাসে মাসে ভালোই সঞ্চয় করতে পারেন। তিনি কোনো কোনো শার্ট টানা ২০ বছর ধরে ব্যবহার করেছেন। পুরনো হলেও তিনি নতুন কাপড়চোপড় কেনেন না। তিনি বলেন, ‘কাপড়চোপড় পুরনো হলেও পরতে পারি; তাই নতুন কাপড় লাগে না।’
ছোটবেলার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ছোটবেলায় তাঁর পরিবার বেশ দরিদ্র ছিল। তবে, সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ গ্রহণশেষে তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। দেশ তাকে অনেককিছু দিয়েছে; তিনিও বিনিময়ে দেশকে কিছু দিতে চান। যুবকালে তিনি সেনাবাহিনীর একজন সৈন্য ছিলেন। চীনা গণমুক্তি ফৌজের সৈন্য হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধ আর কোরিয়ান যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন তিনি এবং প্রথম শ্রেণীর পুরস্কারও লাভ করেছেন।
জনাব স্যু বেশ স্নেহময় প্রবীণ। প্রতিবছর তিনি শুধু দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা করেন তা নয়, বরং আশেপাশের লোকদের সাহায্যেও এগিয়ে আসেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনী গ্রামে বসবাস করতো। তখন কৃষকরা নিজেরা না-খেয়ে সৈন্যদের খাইয়েছে, খাদ্যশস্য সরবরাহ করেছে। ক্যাম্প না-থাকলে গ্রামবাসীদের বাড়িতে থাকতাম আমরা। তাঁরা নিজের বাড়িঘরে আমাদের জায়গা দিতেন। তাই, গ্রামবাসীদের প্রতি আমার অনেক ভালোবাসা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, চীনের শহরায়নের প্রক্রিয়ায় গ্রামীণ শ্রমিকদের অনেক অবদান রয়েছে। তাদের প্রচেষ্টায় শহরের আবর্জনা দূর হয়, নতুন বাসভবন নির্মিত হয়। তাই যখন আশেপাশে এমন গ্রামীণ শ্রমিকের অসুস্থতার খবর শোনেন, তিনি তার সাহায্যার্থে এগিয়ে যান।
জনাব স্যুর বয়স ৯৫ বছর। তবে, এখনও তার শারীরিক অবস্থা বেশ ভালো; তিনি স্বাস্থ্যবান ও প্রাণবন্ত। তিনি দ্রুত হাঁটাহাটি করতে পারেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীতে নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস গড়ে ওঠে তার। অবসরকালেও তিনি অনেক ভোরবেলায় জেগে ওঠেন এবং প্রতিদিন ৮ ঘন্টার মতো ঘুমান। দিনের বেলায় হাঁটাহাটিও তাঁর নিত্যদিনের অভ্যাস। তার স্ত্রীর শরীরও মোটামুটি ভালো। তাঁরা একে অপরের যত্ন নেন। অবসরগ্রহণের পর প্রবীণদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি রান্নার কোর্স করেছেন। এখন ভালো রান্না করতে পারেন।