নৈতিক ক্লাস: চীনা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উন্নয়ন ও মূল্যবোধ গঠনে সহায়ক
তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন যে, সন্তানেরা যেন ফুলের মতো। বাবা-মা তাদের বড় হওয়ার জন্য সুর্যালোক, পানি ও মাটি দিতে পারেন, তবে কাঠমিস্ত্রির মতো নির্দিষ্ট ডিজাইনে সন্তানকে আসবাবপত্রের মতো তৈরি করার দরকার নেই। প্রত্যেক শিশু আলাদা ও অনন্য। তাই তাদের বড় হওয়ায় পরামর্শ দেওয়া ঠিক আছে, তবে নিয়ন্ত্রণ না করাটা খুব জরুরি। সন্তানের জন্মের আগে বাবা-মায়ের মনে তার শিক্ষার বিষয় কিছু চিন্তাভাবনা থাকে। তবে সন্তানের জন্ম এবং বড় হওয়ার পর বিশেষ করে স্কুলে যাবার পর আশেপাশের পরিবেশের প্রভাবে বাবা-মায়ের চিন্তাভাবনাও পরিবর্তন হয়। বস্তুত ছেলেমেয়েদের যে কোনো কাজে অংশ নেওয়া পরিবারের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কারণ সন্তানেরা সহজভাবে পিতামাতার উপর নির্ভর করে। যদি তাদের বেশি নিয়ন্ত্রণ বা সমালোচনা করা হয়, তাহলে ছেলেমেয়ের সঙ্গে আন্তরিক ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়।
অতীতকালে বাবা-মারা ছোটবেলায় অনেকে নিজেই নিজের হোমওয়ার্ক করা এবং নিজেই বাড়ি থেকে স্কুলে আসাযাওয়া করতেন। এমন ছেলেমেয়েদের স্বাধীন চেতনা দ্রুত গড়ে ওঠে এবং এটি তাদের বড় হওয়ার পর জীবনযাপনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমন সন্তানদের কর্মদক্ষতা ও মানসিক অবস্থা আরো শক্তিশালী হয়।
তাই পিতামাতার উচিত সন্তানকে স্বাধীনভাবে হোমওয়ার্ক করার সুযোগ দেওয়া। একদিকে সন্তানের বড় হওয়ার পথে সঠিক নির্দেশনা ও যথাযথ পরামর্শ দেয়া, অন্যদিকে অতিরিক্তভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ না করা। আরো আরামদায়ক মানসিক অবস্থায় তাদের জন্য সৃজনশীলতার সুযোগ ও সম্ভাবনা দেয়া। যদিও কিছু কিছু শিশুর বোঝার ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে একটু দুর্বল হতে পারে, তবে তারা নিজের গতিতে একসময় সব দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। নিজের পদক্ষেপ অনুসরণ করে বড় হওয়া শিশুর মানসিক অবস্থা আরো স্বাস্থ্যকর হয়, এটিও জ্ঞান অর্জন করা বা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
মোদ্দাকথায় সন্তানদের বড় হওয়ার পথে সহাবস্থান ও দেখাশোনা করার সময় তাদের অনুভূতিকে সম্মান করা এবং তাদের দৃষ্টিতে বিভিন্ন বিষয়কে বিবেচনা করা বাবা-মায়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এমন সঠিক চেতনা থাকলে সন্তানদের সহাবস্থানে বাবা মা আরো ইতিবাচক ভুমিকা পালন করতে সক্ষম।