চীনের প্রাথমিক ও মাধ্যমকি স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা
তবে কিছু শিক্ষক কর্মযোগ্যতার স্বীকৃতি পেয়ে কাজে অনাগ্রহী হয়েছেন, বিশেষ করে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর স্কুলের গ্রন্থাগারে কাজ করতে আবেদন করেন। এভাবে তাদের মাসিক বেতন প্রায় সমান থাকে, তবে দায়িত্ব ও কাজের চাপ অনেক কম হয়। যদিও এমন শিক্ষকের পরিমাণ খুবই কম, তবে অল্প হলেও তা শিক্ষাব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় চীন সরকার অযোগ্য শিক্ষকদের প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিয়েছে। তাছাড়া, কিছু কিছু শিক্ষক দুর্বল স্বাস্থ্যের কারণে সময় মতো শিক্ষকতার কাজ করতে পারেন না। এমন শিক্ষকদের জন্য প্রত্যাহার ব্যবস্থায় তাদের দ্রুত অবসর নেওয়ার জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়।
উদাহরণ দিয়ে বলি, চীনের নিংসিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে প্রচুর শিক্ষক বেসরকারি শিক্ষক থেকে সরকারি শিক্ষক হবার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে দুর্বল। তাই ২০১১ সাল থেকে এমন শিক্ষকদের প্রত্যাহার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। যাদের শরীরিক অবস্থা দুর্বল এবং অবসরের বয়সের আগে অবসর নিতে চান, তাদের জন্য প্রত্যাহার ব্যবস্থা বেশ কার্যকর হয়। তারা অবসরে যাবার পর আরো বেশি যুব শিক্ষক চাকরির আবেদন করতে পারেন।
এ সম্পর্কে চীনের শিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণাগারের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সংস্কার বিভাগের প্রধান ওয়াং ফেং বলেন, ‘বর্তমানে বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে সরকারি শিক্ষকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত, তাই অনেক স্কুলে অস্থায়ী শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। যদি অযোগ্য শিক্ষক, সরকারি শিক্ষক হয়ে সুবিধা অধিকার করে, তাহলে সেটা দক্ষ, অস্থায়ী শিক্ষকদের জন্য ন্যায্য হয় না। তাই অযোগ্য শিক্ষকদের প্রত্যাহার ব্যবস্থার চালু করা প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের শিক্ষাদান গুণগতমান উন্নয়নের পর্যায়ে রূপান্তর করা হয়েছে, তাই চীনারা শিক্ষাদানের মানের প্রতি আশাবাদও বেড়েছে। ইস্ট চায়না নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ওয়াং ইয়ান লিং বলেন, ‘গত কয়েক বছরে চীনের উচ্চ বিদ্যালয়ে কোর্স চালু এবং ক্লাসের মানদণ্ডসহ বিভিন্ন বিষয় সংশোধন করা হয়েছে। এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে শিক্ষকদের কর্মদক্ষতার মান উন্নীত করতে হয়। যদি শিক্ষকরা অতীতকালের মতো কাজ করেন, তাহলে তাদের শিক্ষাদানের মান ও ফলাফলে সন্তুষ্ট হবার সুযোগ নেই এবং শিক্ষার সংস্কারের উদ্দেশ্যও বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।