চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শকদের গল্প
এ সম্পর্কে শিক্ষক সু মনে করেন, ছাত্রছাত্রীদের সাথে সহমর্মিতা ও সমঝোতা হবে পরামর্শকের প্রথম কাজ। যদি শিক্ষকের দৃষ্টিতে মনে হয় কথাবার্তা বা আড্ডা দিয়েই কাজ শেষ করা যায়, তাহলে ছাত্রছাত্রীদের মানসিক দুঃখ ও বিভ্রান্তি অনুভব করা মুশকিল হবে। ছাত্রছাত্রীদের বিভ্রান্তি সাধারণত তাদের আবেগ ও অনুভূতির সাথে জড়িত।
শিক্ষক ওয়েন ছেন ইয়াং মনে করেন, পরামর্শকদের কাজ কঠিন নয়, তবে তাদের কাজে আরও বেশি আবেগ দরকার। বর্তমানে চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ২০০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য একজন পরামর্শক আছেন। তাই প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর মানসিক অবস্থার ওপর খেয়াল রাখা পরামর্শকের জন্য সহজ নয়।
শিক্ষক সু ইয়ু নিজের কাজের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেন, একবার একজন অন্তর্মূখী ছাত্র তাকে জিজ্ঞেস করে, কেন সে ক্লাসের সহপাঠীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারে না? কেন সবার সাথে সহাবস্থান তার জন্য এতো কঠিন ব্যাপার? শিক্ষক সু তার কথা শুনে প্রায় দুই ঘন্টা ক্লাসের পরিবেশ নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করেন। ফলে তিনি জানতে পারেন যে, এ ছাত্র পর পর কয়েকটি অনুষ্ঠানে ক্লাসের সহপাঠীদের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি। ফলে তারা মনে করে সে একা থাকতেই পছন্দ করে। তাই পরের অনুষ্ঠানে তারা তাকে আর ডাকেনি। এটি আসলে একটি ভুল বোঝাবুঝির ফল। পরে তিনি একটি বিশেষ ক্লাস মিটিং আয়োজন করেন। সবাইকে আত্মপ্রকাশের গুরুত্ব ও অন্যদের সাথে আড্ডার পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। পরে এ ছাত্রের সমস্যার সমাধান হয়।
শিক্ষক ওয়েনের দৃষ্টিতে অন্তর্মুখী বাচ্চারা যদি মেজাজের সমস্যার সম্মুখীন হয়, তখন তারা অন্যদের সাথে ভাব বিনিময় করতে চায় না। দীর্ঘকাল ধরে নিজেই এমন সমস্যার সম্মুখীন হলে, তাদের মানসিক সমস্যা সহজে ঘটে এবং এটি বোমা বিস্ফোরণের মতো, যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে। এ সমস্যার সমাধানে শিক্ষক ওয়েন সবার সাথে খেলতে চেষ্টা করেন। একাডেমির সমর্থনে তিনি একটি বহুমুখী মিডিয়া দল গঠন করেন। তারা বৈশিষ্ট্যময় সাংস্কৃতিক ডিজাইন বা অনুষ্ঠান করে। এ কাজের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কল্পনা ও উদ্ভাবনক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নিজেদের মধ্যে সহায়তা ও মত বিনিময়ের অভ্যাসও তৈরি হয়। টানা কয়েক মাস ধরে তারা বুকমার্ক, ব্যাগ ও মাউস প্যাডসহ বিভিন্ন জিনিস ডিজাইন করেছে।