চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শকদের গল্প
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চবিদ্যালয়ে পরামর্শক দল গঠন নীতিমালা’ প্রকাশিত হয়। তাতে পরামর্শকদের কাজের গুরুত্ব ও ভুমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে। পরামর্শকরা কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় পরামর্শ দেয় না, বরং তাদের দৈনিক জীবনযাপনের পদ্ধতি ও সঠিক মূল্যবোধ গঠনের ব্যাপারে দিক-নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
বর্তমানে চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরামর্শকদের কাজে আরও পেশাদারিত্ব এসেছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত এমন পরামর্শকের সংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
চীনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনবিষয়ক মাস্টার্স একাডেমির পরামর্শদাতা সু ইয়ু প্রতি সপ্তাহের বুধবার তার পরামর্শক অফিসে কাজ করেন। এ অফিস রুম বড় নয়, তবে অনেক ছাত্রছাত্রী এখানে আসতে আগ্রহী। তারা মনে করে, নিজের মানসিক সমস্যা ও পড়াশোনার চাপ নিয়ন্ত্রণে পরামর্শক সু ইয়ু গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।
২০১৭ সালে শিক্ষক সু ইয়ু এ পরামর্শক অফিস চালু করেন। এর মূল উদ্দেশ্য, স্নাতক হওয়া ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পেতে সহায়তা করা। তবে, ধীরে ধীরে তিনি খেয়াল করেন যে, অনেক শিক্ষার্থীর কাছে চাকরি খুঁজে পাওয়া মূল সমস্যা নয়, তাদের মূল সমস্যার সাথে মানসিক দিকটা জড়িত। যখন তারা বুঝতে পারেন না, বড় হলে ঠিক কী করবেন, তখনই তারা মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হন।
সু ইয়ু মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের সাথে উচ্চবিদ্যালয়ের জীবনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। অনেক ছাত্রছাত্রী হোস্টেলে থাকে এবং বাড়ির সাথে তাদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তাই যখন মনে দুঃখ পায়, তখন তারা দ্রুত পিতামাতার কাছ থেকে পরামর্শ বা সান্ত্বনা পেতে পারে না। একবার শিক্ষক সু খেয়াল করেন যে, একটি মেয়ের পরিবার হঠাত্ আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। এতে তার মানসিক অবস্থা অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে, মেয়েটি চোখের জল ফেলতে ফেলতে নিজের দুঃখের কথা প্রকাশ করে। মেয়ের গল্প শুনে শিক্ষক সু তার দুঃখ বুঝতে পারেন। তখন তার আচরণ ছিল একজন বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো।