চীনে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাসনদের গুরুত্ব
চীন একটি জনবহুল দেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে উচ্চশিক্ষার্থী সংখ্যাও অতীতের যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। দেশের বিভিন্ন মহানগর, প্রদেশ ও এলাকায় শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষার মানের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষাসনদের মানও ভিন্ন। বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান যখন নিয়োগ দেয়, তখন চাকরিপ্রার্থী কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পেয়েছে, সেদিকে বিশেষ নজর দেয়। যারা সাধারণ বা অপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন, তাদের চাকরি পাওয়া তুলনামূলকভাবে কঠিন হয়। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয় নিয়ে একটু আলোচনা করবো।
শুরুতে একটি ছেলের কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে চাই। তার নাম লিন ছি। উচ্চবিদ্যালয়ে তার পরীক্ষার ফলাফল বেশ ভালো ছিল না। ফলে শুধু জন্মস্থানের একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সুযোগ পায় সে। পরে যদিও সে অনেক চেষ্টা করে, অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ডিগ্রী পেয়েছেন, তবে কর্মসংস্থানের বাজারে সিভি দেওয়ার সময় তার স্নাতক বিশ্ববিদ্যালয়ের মান তেমন উচ্চ না হওয়ায় তিনি ভালো চাকরি পাচ্ছিলেন না। এ সম্পর্কে ছেলে লিন ছি বলেন, একজন শিক্ষার্থী ধীরে ধীরে উন্নতি করতে পারে, এটা কোনো স্থির বিষয় নয়। যদি শুধু স্নাতক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়, তবে সেটা হবে অন্যায়। অনার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে আরও ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তার মতো আরো অনেক ছাত্রছাত্রী একই সমস্যা বা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এ প্রেক্ষাপটে, ২০২০ সালে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ ‘নতুন যুগে শিক্ষার পর্যালোচনা ব্যবস্থার সংস্কার প্রস্তাব’ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, সঠিক পদ্ধতিতে দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগের কোম্পানি যখন কর্মী নিয়োগ করবে, তখন কেবল স্নাতকপত্র বা স্নাতক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাঙ্কিং ও মর্যাদা বিবেচনা করলে চলবে না; সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য উপযোগী ও দক্ষ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগ করাও জরুরি। তাদের চরিত্র, কর্মদক্ষতা, নৈতিকতাসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় রাখতে হবে, শুধু শিক্ষাসনদের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া চলবে না।