পূর্ব এবং পশ্চিমের মেলবন্ধন- যৌথভাবে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি সুন্দর অধ্যায় রচনা করেছে
চীনের ‘ক্যান্টোনিজ রিদম’ শুনে আনন্দে মাতোয়ারা মালয়েশিয়া
"প্রথম গান শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি।" মালয়েশিয়ার চীনা ছাত্র ই সিন "সিল্ক রোড ক্যান্টোনিজ রিদম-কুয়াংতোং এথনিক কনসার্ট"-এ সাংবাদিকদের বলেছেন, "এটি আমার শোনা সেরা কনসার্ট।"
"সিল্ক রোড ক্যান্টোনিজ রিদম – কুয়াংতোং এথনিক কনসার্ট" সম্প্রতি সিয়ামেন ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া শাখায় অনুষ্ঠিত হয়। কুয়াংতোং প্রাদেশিক পার্টি কমিটির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং প্রচার বিভাগের মন্ত্রী ছেন জিয়ানওয়েন, মালয়েশিয়া-চীন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মজিদ, মালয়েশিয়ায় চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর জাং চেনসহ ৫’শ জনেরও বেশি মানুষ, স্থানীয় দর্শক এবং সিয়ামেন ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার শিক্ষক এবং ছাত্ররা এই ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতির পরিবেশনা উপভোগ করেছেন। তারা দক্ষিণ চীনের লিংনান সংস্কৃতির স্পর্শ পেয়েও মুগ্ধ হয়েছেন।
ছেন জিয়ানওয়েন তার বক্তৃতায় আশা প্রকাশ করেন যে অনুষ্ঠানটি চীন ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে উন্নীত করবে এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে দুই দেশের জনগণের বন্ধুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। কারণ সঙ্গীত হলো এমন একটি ভাষা যা সব জাতির মানুষই বুঝতে পারেন।
সেই রাতে, কুয়াংতোং ন্যাশনাল অর্কেস্ট্রার শিল্পীরা "রেইন বিটস দ্য প্লান্টেনস", "মুনলাইট নাইট অন দ্য স্প্রিং রিভার" এবং "এ হান্ড্রেড বার্ডস পে অ্যাটেনডেন্স টু দ্য ফিনিক্স" এর মতো অনেক বিখ্যাত গান পরিবেশন করেন।
মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় লোকগান "লা সুও সুও ইয়াং" চীনের জাতীয় বাদ্যযন্ত্রে পরিবেশিত হয়েছিল। এই সুর শুনে উপস্থিত দর্শকরা অনেকক্ষণ ধরে করতালিতে মুখর করে তোলেন অনুষ্ঠান।
ই সিন মালয়েশিয়ার সিয়ামেন ইউনিভার্সিটির একজন শিক্ষার্থী। তিনি শৈশব থেকেই ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতি পছন্দ করেন এবং ১১ বছর ধরে গুজেং বাজাতে শিখছেন। তিনি বলেন, "এই প্রথম আমি গাওহুকে লাইভ পারফর্ম করতে শুনলাম। এর শব্দ অত্যন্ত বিস্ময়কর। পাখির শব্দ অসাধারণ জীবন্তভাবে অনুকরণ করতে পারে। যখন বাঁশির সঙ্গে এর সুর মিলে যায় তখন আশ্চর্য এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আমার জন্য এটি ছিল এক অনন্য মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা।”
চীনে মালয়েশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত মজিদ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাতে চীনের জাতীয় বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে "লা সুও সুও ইয়াং" সুরের পরিবেশনা শুনে তিনি খুব অবাক হয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি মালয়েশিয়ায় এমন আরও অনেক উচ্চ-পর্যায়ের শিল্পীদল আসার অপেক্ষায় রয়েছি, যা মালয়েশিয়ানদের কেবল চীনা সংস্কৃতি বুঝতেই সাহায্য করবে না, পাশাপাশি চীনা শিল্পীদেরও মালয়েশিয়ার সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীরভাবে জানার সুযোগ সৃষ্টিকরবে।"
কনসার্ট হলের বাইরে, কুয়াংতোং পেপার কাটিং, ফোশান উডব্লক নিউ ইয়ার পেইন্টিং, দা’উ মাটির ভাস্কর্য, ফেংসি হাতে আঁকা লাল মাটির পাত্র, ছাওচৌ কুংফু চা শিল্প এবং শাওগুয়ান ইয়াও জাতির এমব্রয়ডারির মতো অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রদর্শনও অনেক মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। পথচারীরা একটু থেমে দাঁড়িয়ে এইসব অবৈষয়িক সংস্কৃতির পরিবেশনা দেখেছেন।
অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারীরা ওখানে কাগজ, সূচিকর্ম এবং খোদাই করা মাটির ভাস্কর্যগুলো তৈরি করেন। নতুন বছরের ছবি আঁকার অভিজ্ঞতা নিতে দর্শকদের আমন্ত্রণ জানান। একেবারে সামনাসামনি এবং হাতে কলমে এসব অবৈষয়িক সংস্কৃতির অভিজ্ঞতার বিনিময়ের ফলে দর্শকরা লিংনান সংস্কৃতির প্রতি অন্যরকম একটা আকর্ষণ অনুভব করেন।
এই ইভেন্টটি কুয়াংতোং প্রাদেশিক সরকারের তথ্য অফিস এবং কুয়াংতোং প্রাদেশিক সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগ দ্বারা আয়োজিত ২০২৩ সালের আকর্ষণীয় চায়না-কুয়াংতোং "সাংস্কৃতিক বিদেশী সফর" সিরিজের একটি।
নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত ইতালি এবং মিশরে এই সিরিজের একাধিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর লক্ষ্য চীন ও অন্যান্য দেশের সভ্যতার মধ্যে বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার প্রচার করা, লিংনান সংস্কৃতিসহ চীনা সংস্কৃতির সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও এর আকর্ষণকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা।
"চীন-অস্ট্রেলিয়া চা সংস্কৃতি পর্যটন সপ্তাহ" এবং ল্যাঙ্কাং-মেকং পর্যটন সহযোগিতা সংক্রান্ত ইভেন্ট সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।