ডিজিটাল যুগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নতুন পদক্ষেপ
ঐতিহ্যিক শিল্প যুগে নিয়মিত ক্লাসরুমে বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা আলাদা, তাই ক্লাসের বিষয়ের প্রতি আবেগও ভিন্ন। ঐতিহ্যিক ক্লাস প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট পড়াশোনার পরিকল্পনা দিতে পারে না এবং ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায় উত্সাহ দিতেও সক্ষম নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম শুধু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জ্ঞান বিতরণের জন্য নয়, বরং তাদের চিন্তাভাবনা ও সহযোগিতার দক্ষতাসহ বিভিন্ন সামর্থ্য বাড়াতে হবে এবং ছাত্রছাত্রীদের চরিত্র গঠনে সহায়তা দিতে হবে। তাই ক্লাসের ভিডিও দেখার পর ছাত্রছাত্রীরা বাস্তব অনুশীলন ও সহপাঠীদের সাথে আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেরাই বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন করতে পারে। যদি তারা কোনোকিছু না বোঝে, তবে শিক্ষকদের কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারে।
নতুন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নতুন ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা সহজে গ্রহণযোগ্য। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো বয়স্ক ও সিনিয়র শিক্ষকের জন্য নতুন পদ্ধতির ক্লাস চ্যালেঞ্জিং। তাদেরকে বেশি সময় দিতে হবে, পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে।
বর্তমানে শাংহাই চিয়াওথং বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ৫ ভাগের এক ভাগ শিক্ষক অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। তাই শিক্ষকদের জন্য প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণও জরুরি ব্যাপার। শিক্ষকদের জন্য ডিজিটল যুগে তাদের পেশাদার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছাড়া আরো বিস্তারিত জ্ঞানের কাঠামো ও প্রযুক্তির দক্ষতা প্রয়োজন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য ডিজিটাল যুগে তাদের আরো বেশি উদ্ভাবনী দক্ষতা আর নিজে নিজে পড়ার দক্ষতা বৃদ্ধি করা দরকার।
২০১৮ সালে বেইজিং বিদেশি ভাষা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিংসিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে প্রথম দফার এআই প্রযুক্তির শিক্ষক প্রশিক্ষণের পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও ৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের ২০টি শহরে অনলাইন বুদ্ধিমান প্রযুক্তিতে ভিডিও ক্লাস চালু হয়।
২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘শিক্ষকদের ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষতা’ সম্পর্কিত মানদন্ড প্রকাশ করে। এতে শিক্ষকদের ডিজিটাল চেতনা, ডিজিটাল প্রযুক্তির জ্ঞান ও দক্ষতা, ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োগসহ বিভিন্ন মানদন্ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেবল সমৃদ্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকবে না, বরং আধুনিক প্রযুক্তিতে শিক্ষার্থীদের পড়ানোর দক্ষতাও থাকতে হবে।
ডিজিটাল বুদ্ধিমান যুগ ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের জন্য একই সাথে সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ।