পিতামাতার বকাঝকা বাচ্চাদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
বাচ্চার সাথে কথা বলার সময় সহজ-সরল ভাষা ব্যবহার করতে হবে। বিমূর্ত বর্ণনা এড়িয়ে চলতে হবে। বাচ্চারা যদি পিতামাতার কথা বুঝতে না পারে, তবে তারা কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। পিতামাতা যখন বাচ্চার সাথে আড্ডা দেন, তখন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা ভালো। যেমন, স্কুলের গ্রন্থাগারে কোনো মজার বা আকর্ষণীয় বই রয়েছে কি না, ইত্যাদি। এমন প্রশ্নের জবাবে বাচ্চা অনেক কথা বলতে পারে। যদি শুধু তাকে জিজ্ঞেস করেন স্কুলে কেমন সময় কেটেছে? সহপাঠীদের সাথে সম্পর্ক কেমন? তাহলে সে খুব সহজ উত্তর দেবে।
তা ছাড়া, বাবা-মা কিছু উন্মুক্ত প্রশ্ন করে বাচ্চাদের সাথে আড্ডা করতে পারেন। যেমন সাপ্তাহিক ছুটিতে বাচ্চারা বাইরে ঘুরে বেড়াতে চায়। এর আগে হোমওয়ার্ক সম্পন্ন করতে হবে। তার সাথে শনিবারের আগে লেখাপড়ার বিস্তারিত পরিকল্পনা এবং ঘুরে বেড়ানোর জায়গা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। পাশাপাশি বাইরে ঘুরে বেড়াতে কী কী প্রয়োজনীয় জিনিস সাথে নিতে হবে, এ নিয়েও আলাপ হতে পারে। এতে বাচ্চার চিন্তার ক্ষমতা ও ভাষা প্রকাশের দক্ষতা বাড়বে।
বাচ্চারা পিতামাতার জীবনযাপনের প্রতি কৌতুহলী হবে এটা স্বাভাবিক। বাবা-মার কর্মস্থলের পরিবেশ ও কাজের বিষয় নিয়ে বাচ্চাদের আগ্রহ থাকে। পিতামাতা সেসব তথ্য শেয়ার করতে পারেন।এমন আড্ডার মাধ্যমে পিতামাতার সাথে বাচ্চার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হতে পারে।
যে-কোনো বয়সের বাচ্চা কোনো-না-কোনোভাবে সমস্যা বা বিরক্তিকর ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে। বাবা-মার উচিত নিয়মিত বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা, তাদের মানসিক অবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া। এভাবে যদি বাচ্চাদের কোনো মানসিক সমস্যা থাকে তাহলে সে সম্পর্কে পিতামাতা সহজে জানতে পারেন।
বাবা-মা নিজেদের দুর্বলতা ও ব্যর্থতা বা অচলাবস্থা নিয়ে বাচ্চার সাথে কথা বলতে পারে। কারণ, এভাবে তারাও বাচ্চার কাছ থেকে সমস্যা বা ত্রুটিসংশ্লিষ্ট তথ্য জানতে পারবে। বাবা-মা আন্তরিকভাবে নিজের দোষ বা দুর্বলতা তুলে ধরলে, বাচ্চাও নিজের দোষ বলতে ভয় পাবে না। যদি তারা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়, তখন বাবা-মার কাছ থেকে সমর্থন পেতে আগ্রহী হকে।
মাধ্যমিক স্কুলের আগে বাচ্চারা পিতামাতার ওপর বেশ নির্ভরশীল থাকে। এসময় বাবা-মা বাচ্চাদের যত বেশি সময় দেন, তত ভালো। এভাবে বাচ্চারা সুখী পারিবারিক আমেজ অনুভব করতে পারে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।