পিতামাতার বকাঝকা বাচ্চাদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
তাহলে কিভাবে বাচ্চাদের সাথে আড্ডা দেওয়া উচিত? সেটি অনেক বাবা-মায়ের জন্য কঠিন ব্যাপার। বয়সের ব্যবধানের কারণে বাবা-মা ও বাচ্চার প্রিয় বিষয় ও চিন্তাভাবনায় ব্যাপক পার্থক্য থাকবে, এটা স্বাভাবিক। এ অবস্থায় কিভাবে বাচ্চাদের সাথে কথা বলতে হবে, সেটি বাবা-মার জন্য একটি পরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জ বটে। যেমন স্কুল থেকে বাসায় ফিরে আসার পথে বাচ্চার কাছ থেকে স্কুলের গল্প শোনা, স্কুলের কাছাকাছি ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় দোকানে তার জন্য কিছু মিষ্টি বা হালকা খাবার কেনা, কে কে ক্লাসে শিক্ষকের প্রশংসা পেয়েছে তা জানা, স্কুলে আসা নতুন শিক্ষকের চরিত্র কেমন সে সম্পর্কে বাচ্চার কাছ থেকে শোনা, ইত্যাদি। অধ্যাপক ছিয়ানের দৃষ্টিতে, পিতামাতা বাচ্চাদের কথা শুনতে আগ্রহী হলে, বাচ্চাদের বর্ণনা থেকে তার স্কুলের জীবনযাপন, মানসিক অবস্থা ও স্কুলের বন্ধুদের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারেন। এসব আড্ডা বস্তুত বাচ্চার মনের দুয়ার খুলে দেয়। বাবা-মা নিজেদের শিক্ষাতত্ত্ব ও মতামত এসব আড্ডার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারেন এবং এভাবে বাচ্চারা আরও সহজে তা গ্রহণ করতে পারে। পিতামাতা ও বাচ্চার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভিত্তি বাচ্চার জন্য পিতামাতার সহনশীলতা ও ভালোবাসা।
আরেকটি টিপস তিনি দিয়েছেন। বাচ্চারা যখন স্কুলের জীবনযাপন বা সহপাঠীদের গল্প শেয়ার করে, তখন বাবা-মাকে মনোযোগ ও ধৈর্যের সাথে তা শুনতে হবে। যদি মনোযোগ না দেন, শুধু মুখে হু হা করেন, তবে বাচ্চা মজা পাবে না, কথা বলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। মনোযোগ দিয়ে বাচ্চার কথা শুনলে তার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাবে।
আড্ডার সময় বাবা-মার শরীরী ভাষাও গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চার চোখে চোখ রাখা, বাচ্চাকে স্পর্শ বা আলিঙ্গন করা, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চার অনুভূতি অনুভব করা বা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। সমালোচনা ও পর্যালোচনার কথা যত কম তত ভালো। যখন বাচ্চা তার কথার প্রতি বাবা-মার আগ্রহ অনুভব করে, তখন তার আত্মপ্রকাশের আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। তখন বাচ্চারা পিতামাতার পরামর্শ বা প্রস্তাবও শুনতে চায়, পিতামাতার পারিবারিক শিক্ষার নির্দেশনা মেনে চলতে আগ্রহী হয়।