পিতামাতার বকাঝকা বাচ্চাদের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
আজকের অনুষ্ঠানে চীনা পিতামাতাদের সঙ্গে তাদের সন্তানদের, বিশেষ করে শিশু-সন্তানদের সম্পর্ক নিয়ে কিছু আলোচনা করবো। অনেক মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের বাচ্চাদের বাবা-মারা প্রায়শই একটি অভিযোগ করেন যে, বাচ্চা দিন দিন বড় হয়, আর তাদের পিতামাতার সাথে কথা বলার সময় দিন দিন কমে। তা ছাড়া, বেশি কথা বললে সহজে ঝগড়া করে এবং কখনও কখনও পিতামাতার সঙ্গে বাচ্চার কথাবার্তাও বন্ধ হয়ে যায়, সাময়িকভাবে হলেও। বলা যায় বাবা-মা ও বাচ্চা একে অপরের অনেক কাছের হলেও, ধীরে ধীরে যেন পরস্পরের কাছে অপরিচিত হয়ে যায়।
বস্তুত, বাচ্চারা ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সাথে কথা বলতে বেশ পছন্দ করে। এটি মানবস্বভাবের অংশ। তবে বাচ্চা বড় হওয়ার পর যদি বাবা-মা সবসময় তাদের লেখাপড়া বা জীবনপদ্ধতি নিয়ে বকাঝকা করেন, তাহলে বাচ্চারা পিতামাতার সাথে কথাবার্তায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে বা নিদেনপক্ষে কমিয়ে দেয়। প্রশ্ন হচ্ছে: কী বিষয় নিয়ে বাচ্চাদের সাথে আলাপ করলে পিতামাতার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হতে পারে? কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, আন্তরিক ও মজার আড্ডা পিতামাতা ও বাচ্চার সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে সহায়ক। সেক্ষেত্রে বাচ্চা পিতামাতার সঙ্গে বেশি কথা বলবে।
কেন বাচ্চাদের সাথে এমনি এমনি আড্ডা করতে হবে? এ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘকাল ধরে বাচ্চাদের সাথে তাদের প্রিয় বিষয় নিয়ে আড্ডা দিলে, কথা বললে, পিতামাতা ও বাচ্চার সম্পর্ক উন্নত হয়। বেইজিং নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ছিয়ান চি লিয়াং মনে করেন, পিতামাতা ও বাচ্চার আড্ডার সময় বাচ্চারা আনন্দ পায়। তখন পিতামাতার প্রতি তাদের আস্থা বাড়ে, আগ্রহ বাড়ে। এ অবস্থায় বাচ্চারা আরো সহজে পিতামাতার সাথে মনের কথা বিনিময় করে বা করতে আগ্রহী হয়। বাচ্চারা তাদের চিন্তাভাবনা ও স্কুলে সম্মুখীন বিভিন্ন সমস্যা বা অন্যদের সাথে সম্পর্ক মোকাবিলার প্রশ্নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাবা-মায়ের সাথে আলোচনা করতে চায়। এভাবে আড্ডার মাধ্যমে বাচ্চাদের সমস্যা বা মনের কথা বুঝতে পারেন বাবা-মা। যদি বাচ্চার কোনো মানসিক সমস্যা থাকে, তাহলে সহজে তা ঠিক করারও সুযোগ তাতে সৃষ্টি হয়।