চীনের শানসি প্রদেশের সেরা শিক্ষক চাং চিয়ের গল্প
একজন শিক্ষার্থী ভালো করে পড়াশোনা করলে, তাঁর পরিবার সুখী হতে পারে; একটি গ্রামের উন্নয়ন স্থানীয় গ্রামবাসীদের জীবনমান উন্নত করতে পারে। চীনের শানসি প্রদেশের ল্যুলিয়াং শহরের লিন জেলার বাইশুকৌ মাধ্যমিক স্কুলের প্রেসিডেন্ট চাং চিয়ে এমন কথা বলেছেন। টানা ১৪ বছর ধরে তিনি পরপর ৫টি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন এবং তাঁর বুদ্ধি, আবেগ ও পরিশ্রমের কারণে পাহাড়াঞ্চলের অনেক ছাত্রছাত্রী উপকৃত হয়েছে। তিনি চীনের মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের সেরা যুবশিক্ষকের সোনার পুরস্কার লাভ করেছেন। চলুন, শিক্ষক চাং চিয়ের গল্প বলি।
শিক্ষক চাং চিয়ে ও তাঁর স্ত্রী ওয়াং সিউ সিউ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় পরস্পরের সাথে পরিচিত হন এবং ২০০৯ সালে স্নাতক হওয়ার পর দু’জন একসাথে শানসি প্রদেশের প্রথম দফার বিশেষ শিক্ষকদলের পরীক্ষায় পাস করেন। তাঁরা শানসি প্রদেশের দূরবর্তী এলাকার স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। শিক্ষক চাং চিয়ে তাঁর জন্মস্থান লিন জেলার সর্বপশ্চিমের ছুইয়ু মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ পান এবং তাঁর স্ত্রী ওয়াং সিউ সিউ লিন জেলার সর্বদক্ষিণের চাওসিয়ান জেলার মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ পান। দুই স্কুলের মধ্যে দূরত্ব ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি। এই পথ আবার পাহাড়াঞ্চলের কঠিন রাস্তা। তখন থেকে নতুন দম্পতি আলাদাভাবে তাঁদের জীবন শুরু করেন।
অতীতের জীবন স্মরণ করে চাং বলেন, “তখন শিক্ষকদের হোস্টেল ছিল পুরনো গুহায়। সেখানকার বসবাসের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। যাতায়াতব্যবস্থাও ছিল অসুবিধাজনক। তাই, আমি স্ত্রীর সাথে মাসে মাত্র দু’একবার দেখা করতে পারতাম। যদিও আমাদের জন্য জীবন একটু কষ্টের ছিল, তবে গ্রামাঞ্চলের বাচ্চাদের পড়াশোনার আগ্রহ দেখে আমরা পরস্পরকে উত্সাহ দেই এবং টানা ২ বছর নিজ নিজ স্কুলে পড়ানোর কাজ চালিয়ে যাই।”
২০১১ সালে শিক্ষক চাং এবং তাঁর স্ত্রী একসাথে লিন জেলার লিচিয়াপিং উপজেলার মাধ্যমিক স্কুলে কাজ করতে শুরু করেন। তাঁরা একসাথে মাধ্যমিক স্কুলের প্রথম বর্ষের একটি ক্লাসে পড়ান। তাঁরা আগ্রহের সাথে নতুন স্কুলে কাজ শুরু করেন। তবে, নতুন সেমিস্টারের প্রথম দিনে ক্লাসে গিয়ে একটু অবাক হয়ে যান। কারণ, ক্লাসরুমের প্রায় অর্ধেক আসন খালি; ক্লাসের ৫৯ জন ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মাত্র ৩৭ জন বসে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ছাত্রছাত্রীদের অনেকের বাবা-মারা নতুন শিক্ষকদের বিশ্বাস করেন না; তাঁরা বাচ্চাদের বড় শহরের স্কুলে স্থানান্তর করতে চান। কেউ কেউ বাচ্চাদের পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত করে চাকরি করতে উত্সাহ দেন।