চীনের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক-শিক্ষার্থীর গ্রামাঞ্চলে কাজ করার গল্প
এ পর্যন্ত চীনের ৩০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩০০টিরও বেশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ স্থাপন করা হয়েছে। তারা এ পদ্ধতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কৃষিকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে কৃষিকাজের উপযোগী করে রূপান্তর করছে। এটা চীনের আধুনিক কৃষির একটি অংশে পরিণত হয়েছে।
ছুচৌ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী পেং ক্য সিন বলেন, “গবেষণার প্রক্রিয়ায় আমরা বাস্তব পদ্ধতি ও মূল ধারণা বুঝতে পেরেছি। কিভাবে স্থানীয় কৃষকদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে, ভিন্ন পরিবেশে জীবনযাপন ও পড়াশোনা সমন্বয় করা যায়, তা আমরা শিখেছি।” শিক্ষার্থী পেং প্রায় ৪০০ দিন ছুচৌ গ্রামে কাটিয়েছেন। তিনি স্বভাবে অন্তর্মুখী ও শান্ত। তবে, গ্রামবাসীদের সাথে পরিচিত হওয়ার পর এখন অনেকের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব হয়েছে। তিনি স্থানীয় কৃষকদের সামনে সবুজ প্রযুক্তির চেতনা প্রচার করেন। এটি পেংয়ের জন্য বড় অর্জন।
চীনের ইয়ুননান প্রদেশের তালি জেলার কুশেং গ্রামে আরেকটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ আছে। সেখানে মাস্টার্স শিক্ষার্থী থাং পো ওয়েন সম্পদের ব্যবহার ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ মেজরে পড়াশোনা করেন। বৃষ্টির দিনে তিনি বিভিন্ন ধরনের বৃষ্টির নমুনা সংগ্রহ করেন। প্রবল বৃষ্টিতেও তিনি বাইরে বেরিয়ে যান নমুনা সংগ্রহ করতে।
কেন তাকে বৃষ্টির দিনে বাইরে যেতে হয়? এরহাই নদীর অববাহিকায় কিছু দূষণের উত্স জানার চেষ্টা ছিল এর কারণ। বৃষ্টির সময় এই এলাকার দূষিত পানি গ্রাম ও কৃষিক্ষেতের চ্যানেলের মাধ্যমে এরহাই নদীতে পড়ছিল। তাই এ সমস্যা মোকাবিলায় ২০২২ সালে শিক্ষাবিদ চাং ফু সুও’র নেতৃত্বে কুশেং গ্রামের এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়।
শিক্ষার্থী থাং বলেন, “কেবল বৃষ্টির সময় আমরা যত বেশি ধরনের সম্ভব পানির নমুনা সংগ্রহ করে থাকি।” সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে থাং বলেন, বৃষ্টির শব্দ শুনলেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে বাইরে যেতে প্রস্তুত। একবার ভোরবেলায় বৃষ্টি পড়ছিল। তখন মাত্র ৫টা বাজে। তিনি মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে শুয়েছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি শব্দ শুনে তিনি বিছানা ছাড়েন এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে বাইরে যান। বাইরে গিয়ে দেখেন প্রাঙ্গণের বাইরে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আগেই সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন।