সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীর গল্প
২০১৩ সালে গবেষক চাং সিয়াও থং চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কুমুতুলা গ্রোটোসের মুরাল মেরামতের দায়িত্ব পালন করেন। এ মুরালের মেরামতস্থান সিনচিয়াং কুকা জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি কর্মস্টেশন। এর অদূরে মরুভূমি থাকার কারণে, নিয়মিত বালিঝড়ের সম্মুখীন হতে হতো। স্থানীয় কর্মপরিবেশ অনেক কঠিন ছিল। প্রতিদিন মুরাল মেরামত ও পরিষ্কারকারী কর্মীদের নিজেদের রান্নাও নিজেদেরই করতে হতো। তখন গবেষক চাংয়ের মেয়ে উচ্চবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি নিজের প্রবীণ পিতামাতার কাছে কন্যার যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে বিনা দ্বিধায় সিনচিয়াং চলে আসেন। বিভিন্ন ধরনের জটিলতা ও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে প্রায় ২ বছর পর তাঁর নেতৃত্বে অবশেষে কুমুতুলা গ্রোটোসের মুরালের মেরামতকাজ সম্পন্ন হয়। তিনি বলেন, যারা কেবল দীর্ঘকালীন একাকী জীবন সহ্য করতে ও দৈনিক বোরিং কাজ করতে পারেন, তারাই ভালো সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকারী হতে পারেন।
সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকারীদের কাজ সম্পর্কে গবেষক চাং বলেন, তাদের জন্য প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ সবচেয়ে জটিল কাজ নয়, বরং নির্মাণকৌশলের অভিনবত্ব অতি গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে তাঁরা আসলে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের আধ্যাত্মিক দিকটিকে সংরক্ষণ করেন। কাজটা সহজ নয়।
বর্তমানে চীনের অনেক সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকারীর সংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। তাঁদের মধ্যে অনেকে বয়স্ক হয়েছেন। তাদের সময় এই পেশায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার বা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ ছিল না। তাই তাদেরকে সিনিয়রদের কাজ দেখে শিখতে হয়েছে। তবে, আধুনিক দক্ষ মেরামতকর্মীদের সংশ্লিষ্ট পুরাকীর্তি বা শিল্পকর্মের ইতিহাস ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক তথ্য-উপাত্ত জানতে হয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্যুরোর পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালে চীনের সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের সাথে জড়িত কর্মীর মোট সংখ্যা ১.৮ লাখেরও বেশি ছিল, যাদের মধ্যে পেশাদার প্রযুক্তিকর্মী মাত্র ৫৫ হাজার এবং সিনিয়র হবার যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীর সংখ্যা ১২ হাজারের চেয়ে কম। এটা একটা সমস্যা বটে।