সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীর গল্প
চীনের জাতীয় জাদুঘরের গবেষক পান লু বলেন, চীনের নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৯ সালে ‘সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ’ শীর্ষক স্নাতক মেজর চালু করা হয়। ফলে, ১৯৯৩ সালে এ মেজরে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে চীনের প্রথম গ্রুপটি বের হয়। চীনে অসংখ্য সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি বা ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। আর প্রতিবছর নতুন করে আবিষ্কৃত সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির সংখ্যাও লক্ষাধিক। আর এ কারণেই চাহিদার তুলনায় সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীর সংখ্যা চীনে তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
এ প্রেক্ষাপটে চীনে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারী ও সংরক্ষণকারীদের প্রশিক্ষণের ওপর অনেক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কে চীনের রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্যুরোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিভাগের প্রধান লুও চিং বলেন, চীনের ‘প্রত্নতত্ত্ব অনুসন্ধানকারীদের রাষ্ট্রীয় পেশাদার দক্ষতার মানদন্ড’ ২০২২ সালে প্রণয়ন করা হয়। সব কাজ শেষ হলে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
চীনের রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের চীনা মাটির পুরাকীর্তি মেরামতকারী ইয়াং ইয়ু চিয়ে বহু বছর ধরে চীনা মাটির সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামত করে আসছেন। নিজের কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের কাজ সহজভাবে বোঝা যায়, তবে এটি সঠিক ও চমত্কারভাবে করা কঠিন। যদিও চীনা মাটির পুরাকীর্তির মেরামত ও পুনরুদ্ধারকাজ শেখা আপাতদৃষ্টিতে কঠিন নয়, তবে এ কাজে দক্ষতা বাড়ানো ও সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির আদি আকৃতি ঠিক রেখে এর মেরামত ও সংরক্ষণকাজ চালিয়ে যেতে ব্যাপক চর্চা ও ধৈর্যের প্রয়োজন।”
সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকাজে বিভিন্ন ধরনের জটিল ও এলোমেলো কাজ করতে হয়, যা কল্পনার চেয়েও বেশি কঠিন। মেরামতকারীদের কাজ সাধারণ মানুষের কাছে বোরিং লাগবে, এটা স্বাভাবিক। যুবকালের কাজের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেন, শুরুর দিকে চীনা মাটির বাটি পরিষ্কার করা তাঁর রুটিন কাজ ছিল। সেই সময় চীনের রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের বিভিন্ন ধরনের চীনা মাটির সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হতো। চিয়াংসি প্রদেশের চিংত্য জেলার চীনা মাটি প্রত্নতত্ত্ব একাডেমির সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে প্রত্নতত্ত্ববিদদের অনুসন্ধান করা প্রত্যেকটি চীনা মাটির সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের ওপর মাটি ও ক্যালসিফাইড পদার্থ পাওয়া যায়। তাই, প্রতিদিন তা পরিষ্কার করা জরুরি হয়ে পরে। সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারের কাজে রাসায়নিকের ব্যবহার করতে হয় অতি সাবধানে। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রায় দুই মাস তিনি প্রতিদিন চীনা মাটির তৈজসপত্র পরিষ্কারের কাজ করেছেন। তাঁর সেই অভিজ্ঞতা মিস ইয়াংয়ের মনে গভীর দাগ ফেলেছে।