চীনের গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে উপযুক্ত ব্যক্তিদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রসঙ্গে
বেইজিং ছাংপিং এলাকার কারিগরি স্কুলের ছাত্র চৌ থিয়েন তুন ফ্যালেনোপসিস চাষের পদ্ধতি শিখেছেন। বর্তমানে তিনি নিজের জন্মস্থান শানতুং প্রদেশের হ্যচে শহরে ১২টি গ্রিনহাউস স্থাপন করেছেন। প্রতিবছর তাঁর আয় ৬ থেকে ৭ লাখ ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, কৃষিকাজ ভালো করে শিখতে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়, তবে লেখাপড়া শেষ করে এসব জ্ঞান ও দক্ষতা নিয়ে সুউজ্জ্বল ভবিষ্যতও গড়া যায়। চৌয়ের গ্রামে ১০ জনেরও বেশি কৃষক ফ্যালেনোপসিস চাষ করেন। তারা গ্রামে বসবাস করে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারেন। এটা অনেক গর্বের ব্যাপার। ভবিষ্যত নিয়ে তিনি অনেক আশাবাদী।
২০২২ সালে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানসংশ্লিষ্ট এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার ৩ বছর পর, কৃষিবিষয়ক কারিগরি স্কুলের স্নাতক শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন বৃদ্ধির হার বেশি। তাদের মাসিক বেতন গড়ে ৬২৯২ ইউয়ান, যা স্নাতক হওয়ার প্রথম বর্ষের চেয়ে অনেক বেশি।
বস্তুত চীনের গ্রামাঞ্চলের বাজার ও উন্নয়নের সুপ্তশক্তি বিভিন্ন স্কুলের স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ঠ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে। বেইজিং কৃষি কারিগরি স্কুলের প্রধান ফান শুয়াং সি মনে করেন, গ্রামাঞ্চলের কম শিক্ষিত ও কম দক্ষতার শ্রমশক্তির চেয়ে, কৃষি কারিগরি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের বড় শক্তি। তারা সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদ পদ্ধতি ও ডিজিটাল প্রশাসনিক ব্যবস্থার আলোকে কৃষিকাজ করতে পারেন। দীর্ঘকাল ধরে এ পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করে গেলে, স্নাতক শিক্ষার্থীরা গ্রামাঞ্চলের শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কৃষি কমিউনিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সেরা প্রযুক্তি কর্মীতে পরিণত হতে পারেন।
চীনের চিয়াংসু প্রদেশের কৃষি ও বন কারিগরি একাডেমির সিপিসি’র সাধারণ সম্পাদক চিয়ান জু পিং মনে করেন, কারিগরি স্কুল গ্রামে প্রবেশ না-করলে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে, গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের জন্য গঠিত কারিগরি শিক্ষা একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থা, যেখানে বিভিন্ন পর্যায়ের যৌথ প্রয়াস ও সরকারের বহুমুখী নীতিমালার সমর্থন দরকার। সর্বপ্রথমে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের কাজে নিয়োজিত সেরা ব্যক্তিদের জন্য আরামদায়ক বসবাসের পরিবেশ নির্মাণ করতে হবে। গ্রামেই শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে। চীন সরকারকে গ্রামে শহরের সমমানের আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি মনে করেন, কৃষির উত্পাদন এলাকার কাছাকাছি উপজেলায়, উন্নত আবাসিক এলাকা নির্মাণ করা হলে যুব-কর্মীরা আকৃষ্ট হবে। তখন তাঁরা পরিবার নিয়ে গ্রামাঞ্চলে থাকতে উত্সাহিত হবে।