চীনের প্রবীণদের শিক্ষা ও প্রসঙ্গকথা
প্রবীণদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা মেটাতে ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের কর্মপ্রতিবেদনে বিভিন্ন বিভাগ, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবীণদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর লক্ষ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি প্রবীণ-স্কুল গড়ে তোলা।
চীনের চিয়াংসি প্রদেশের নানছাং শহরের সিহু এলাকার প্রবীণদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কন্ঠসঙ্গীত, চীনা ক্যালিগ্রাফি, ঐতিহ্যিক ব্রাশ দিয়ে ছবি আঁকা, চীনা অপেরা এবং ইওগাসহ ১৫টি বিভাগের ৩২টি ক্লাস চালু হয়েছে। তাতে ২৮ জন পেশাদার শিক্ষক রয়েছেন এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ১২০০ জনের বেশি। এ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুন সিয়াও মিং বলেন, স্কুলের বিভিন্ন বিভাগ পড়াশোনার সর্বোচ্চ সময় নির্ধারিত হয়েছে ৩ থেকে ৪ বছর। এভাবে সময়মতো শিক্ষার্থীরা স্নাতক হয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন। তখন নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। ফলে প্রবীণ শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আসনসংখ্যার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা অনেকটা দূর হবে। স্নাতক হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা নতুন মেজর বেছে নিতে পারেন, তবে একই মেজরে আর থাকতে পারবেন না।
চীনের পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও লোকসংখ্যা একাডেমির অধ্যাপক হুয়ান পিং ছিং বলেন, চীনে প্রবীণদের জন্য শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ গত শতাব্দীর ৮০-র দশকে সৃষ্টি করা হয়। বর্তমানে অনেক প্রবীণ-বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছে। তবে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা, শিক্ষক, আর শিক্ষার উপকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নতির সুযোগ অনেক। বিশেষ করে, সরকারি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত প্রবীণ-বিশ্ববিদ্যালয় বেশি জনপ্রিয়। আবার বেসরকারি পর্যায়ে ভালো প্রবীণ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম। সমাজের বিভিন্ন মহলে এ ব্যাপারে আরো বেশি প্রচেষ্টা চালাতে পারে। এ সম্পর্কে অধ্যাপক হুয়ান পিং ছিং বলেন, সরকারি প্রবীণ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার খরচ কম এবং শিক্ষার মান ভালো। তাই বয়স্কদের মধ্যে তা বেশি জনপ্রিয়। তবে, প্রবীণদের চাহিদা মেটাতে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সক্ষম নয়। তাই সমাজের বিভিন্ন মহলের যৌথ উদ্যোগে প্রবীণদের জন্য আরো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা অতি জরুরি ব্যাপার। সরকার যদি কিছু সুবিধাজনক নীতি চালু করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে প্রবীণদের জন্য আরো বেশি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে, তাহলে প্রবীণদের চাহিদা মেটানো সম্ভব।