চীনের প্রবীণদের শিক্ষা ও প্রসঙ্গকথা
প্রবীণদের জন্য এমন ক্লাসে পড়াশোনা তাদের জীবনযাপনের একটি অংশে পরিণত হয়েছে। চীনের চিয়াংসু প্রদেশের নানচিং শহরের একজন নাগরিক সংবাদদাতাকে বলেন, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের অনেকেই নির্দিষ্ট সময় পরও বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে চান না। তাই, নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খালি আসন সৃষ্টি হয় না। আবার কোনো কোনো ক্লাসের শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্দিষ্ট আসনের চেয়ে বেশী।
চীনের কুয়াংতুং প্রদেশের শেনচেন শহরের জনাব ওয়ের বয়স ৬৩ বছর। তিনি টানা ৮ বছর ধরে স্থানীয় একটি প্রবীণ স্কুলে মার্শাল আর্ট ‘থাই চি’ শিখছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, কেবল শরীরচর্চা করার জন্য ক্লাসে যাওয়া নয়, বরং বন্ধুদের সাথে নিয়মিত দেখা করা তাঁর কাছে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, অবসর নেওয়ার পর শুধু বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগে না। প্রবীণদের ক্লাসে যোগ দেওয়ার পর, সমবয়সী বন্ধুদের সাথে ভ্রমণসহ অনেক কাজ করার সুযোগ হয়। সেটি তাঁর জন্য বেশ আনন্দের ব্যাপার। তা ছাড়া, প্রবীণদের ক্লাসের খরচও বেশি নয়। এক সেমিস্টার মাত্র কয়েক শ ইউয়ান। সেটি তাঁর জন্য কোনো আর্থিক বোঝা না। ‘থাই চি’ ক্লাস প্রবীণদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয়। তাই সহজে এই ক্লাসে আসন পাওয়া যায় না।
প্রবীণদের স্কুলে নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ বাড়াতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, আসনসংখ্যা বাড়ানো। আরেকটি হচ্ছে নতুন নতুন বিষয় চালু করা। তবে টানা কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে, শিক্ষকদের ওপর চাপও বেড়েছে এবং ক্লাসের কর্মীদের সংখ্যা আর ক্লাসের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। এ সমস্যা মোকাবিলায় কোথাও কোথাও আসনসংখ্যা কমানোও হয়েছে।
বস্তুত, প্রবীণ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। চীনের প্রবীণ পরিষদের প্রকাশিত ‘চীনের বয়স্কদের শিক্ষা উন্নয়ন প্রতিবেদন’ থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ পর্যন্ত চীনে বয়স্কদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজারেরও বেশি। আর অনলাইন ক্লাসসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বয়স্ক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১.৩ কোটিরও বেশি। তবে, এ সংখ্যা চীনের ৬০ বছর বয়সের উপরের লোকসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ।