বধির মেয়ে চেং স্যুয়ান এখন পিএইচডি ডিগ্রিধারী ভাষাবিজ্ঞানী
ইশারা ভাষা একটি সম্ভাবনা। বধির বাচ্চারা ছোটবেলা থেকে এ ভাষার চর্চা শুরু করলে, সেটা তাদের জন্য ভালো। কারণ, ইশারা ভাষা আসলে একটি ভিন্ন ভাষার মতোই। স্বাভাবিক বাচ্চারাও ছোটবেলায় ইশারা ভাষা শিখে ফেললে, তাদের একটি অতিরিক্ত ভাষা শেখা হয়ে যাবে। বড় হওয়ার পর তাদের সামনে কাজের সুযোগ বেশি হবে।
একজন বধির অধ্যাপক হিসেবে ডক্টর চেং বধিরদের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দুটি বিষয় খেয়াল করেছেন। যাদের শ্রবণশক্তি কম, এমন বধিররা মুখের ভাষা শিখতে বেশ আগ্রহী হয়। তারা চায় ইশারা ভাষা ও মুখের ভাষা শিখে অনেক বেশি মানুষের সাথে ভাব বিনিময় করতে। আর যাদের শ্রবণশক্তি একেবারেই নেই, তারা ইশারা ভাষা ব্যবহারে বেশি অভ্যস্ত হয়। তবে, বর্তমানে ইশারা ভাষায় যেসব পাঠ্যপুস্তক পাওয়া যায়, সেগুলো যথেষ্ঠ নয়। অনেক শব্দ বধিরদের জন্য সুবিধাজনক নয়।
এ সম্পর্কে শিক্ষক চেং বলেন, ১৮৮৭ সালে চীনের প্রথম বধির স্কুল চালু হয়। বিভিন্ন প্রদেশের আঞ্চলিক ভাষার পার্থক্যের কারণে উহান, ছোংছিং বা শাংহাইয়ের ইশারা ভাষার শব্দের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যায়। তা ছাড়া, অনেক ইশারা ভাষার শব্দ অভিধানে পাওয়া যায় না।
২০১৮ সালের মে মাসে চীনে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইশারা ভাষার প্রথম অভিধান প্রকাশিত হয়। এ বই রচনার সময় অনেক বধিরের পরামর্শ নেওয়া হয়। তবে, এখনও অনেক শব্দের প্রকাশভঙ্গি একেক জায়গায় একেকরকম, যা একটি সমস্যা।
২০২০ সালে অধ্যাপক চেং স্যুয়ান বেইজিং নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নতুন চাকরি নেন। বেইজিংয়ে আসার পর তিনি ইশারা ভাষা ও বধির প্রশিক্ষণ নিয়ে গবেষণাকাজে কর্মরত আছেন। গত কয়েক বছরে তিনি বিভিন্ন ফিল্ড জরিপের কাজ করেন। বধিরদের প্রশিক্ষণে আরো প্রচেষ্টা চালাবেন এবং তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও আত্মউন্নয়নের জন্য আরো বেশি সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করবেন বলে জানালেন অধ্যাপক চেং।