বধির মেয়ে চেং স্যুয়ান এখন পিএইচডি ডিগ্রিধারী ভাষাবিজ্ঞানী
পরে তিনি হুপেই প্রদেশের প্রতিবন্ধীদের শিল্পকলা দলে যোগ দেন এবং আরো বেশি বধির বন্ধুর সাথে পরিচিত হন। দীর্ঘকাল ধরে তিনি স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের সাথে পড়াশোনা করেছেন এবং মুখ দিয়েও মোটামুটি কথা বলতে পারেন। সেটি অন্য বধিরদের সাথে তাঁর একটা পার্থক্য রচনা করেছে। তখন একটা নতুন সংকট সৃষ্টি হয়। এই সংকট ‘পরিচিতি সংকট’। বধিরদের দৃষ্টিতে তিনি সাধারণ মানুষের সাথে তাদের চেয়ে সহজে ভাব বিনিময় করতে পারেন; আর সাধারণ মানুষদের দৃষ্টিতে তাঁর শ্রবণশক্তি দুর্বল। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর কিছু মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। তখন শিক্ষক তাকে বলেন, ‘তোমার প্রিয় ও আরামদায়ক পদ্ধতিতে জীবন কাটাও। মুখের কথায় হোক বা ইশারা ভাষায় হোক, অবাধে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করা অতি গুরুত্বপূর্ণ।’ তখন তিনি মনে শান্তি পান এবং ইশারা ভাষায় আরও দক্ষতা অর্জন করেন।
ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করার পর তিনি ছোংছিং নর্মোল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। তাঁর ক্লাসে ৮০ জন বধির শিক্ষার্থী ছিল। ক্লাসের শিক্ষার্থীদের পিতামাতারা আশা করেন, তাদের বাচ্চারা শিক্ষক চেংয়ের মতো কথা বলায় দক্ষতা অর্জন করবে এবং সাধারণ মানুষের মতো জীবন কাটাতে সক্ষম হবে।
বধির বাচ্চাদের যদি বিশেষ ভাষা শেখানো না-হয়, তবে তাদের বুদ্ধি অন্যদের তুলনায় কম বিকশিত হবে। শিক্ষক চেং ২ বছর বয়সে শ্রবণশক্তি হারান। তাই অন্য বধির বাচ্চাদের চেয়ে তার অবস্থা একটু আলাদা। তা ছাড়া, তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্য তার মুখের ভাষা বোঝার জন্য নিজেরা অনেক চেষ্টা করেছেন এবং তিনি শ্রবণযন্ত্র ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছেন। তাই চেংয়ের অভিজ্ঞতা সব বধির বাচ্চার জন্য প্রযোজ্য নয়।
বধির পিতামাতাদের নিজেদের বাচ্চাদের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকাও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এ সম্পর্কে শিক্ষক চেং মনে করেন, বধির বাচ্চাদের ইশারা ভাষা ভালো করে শেখা তাদের জীবনের জন্য জরুরি। এভাবে তারা অবাধে অন্যদের সাথে ভাব বিনিময় করতে পারে। ইশারা ভাষা শেখা মুখে কথা বলা শেখার চেয়ে সহজ। ইশারা ভাষায় স্পষ্টভাবে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করা যায়। তিনি স্বাভাবিক লোকজনকেও ইশারা ভাষা শিখতে উত্সাহ দেন, যাতে তারা বধির লোকজনের সাথে ভাব বিনিময় করতে পারে।