বধির মেয়ে চেং স্যুয়ান এখন পিএইচডি ডিগ্রিধারী ভাষাবিজ্ঞানী
২ বছর বয়সে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। একটি ওষুধ খাওয়ার পর তার শ্রবণশক্তি প্রায় নষ্ট হয়ে যায়। সেই সময় তিনি কিছু কথা বলতে পারতেন। মানে, মোটামুটি কথা বলা শেখার পর তিনি বধির হয়ে যান। ফলে, তার জীবন অন্য বধিরদের তুলনায় খানিকটা সহজ হয়।
পরিবারের প্রত্যেক সদস্য মেয়ে চেং স্যুয়ানের স্বাভাবিক জীবনের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তারা চেংয়ের জন্য শ্রবণযন্ত্র কেনেন এবং তাকে কথা বলা শেখাতে চেষ্টা করেন। ছোটবেলায় মুখের কথা শেখার অভিজ্ঞতা চেংয়ের মনে গভীর দাগ কাটে। বাবা-মা প্রতিদিন তার কানের কাছে মুখ নিয়ে একটি শব্দ হাজার বার উচ্চারণ করতেন, যাতে তিনি উচ্চারণটি বুঝতে ও বলতে পারেন। একটি শব্দের উচ্চারণ শিখতে অনেক দিন ধরে চর্চা করতে হতো। কিছু কিছু উচ্চারণ তিনি সহজে ধরতে পারতেন না, যা চেংয়ের জন্য অনেক কষ্টকর ব্যাপার ছিল।
প্রাথমিক পর্যায় থেকেই মেয়ে চেং স্যুয়ান স্বাভাবিক স্কুলে ভর্তি হয়। শ্রবণযন্ত্র ও মনোযোগী পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সে আশেপাশের লোকদের কথার অর্থ বুঝতে চেষ্টা করে। তাঁর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বলেন, যখন ক্লাস হতো, তখন মেয়ে চেং মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শোনার বা বোঝার চেষ্টা করতো। মাঝে মাঝে সে শিক্ষকদের কথা বুঝতে পারতো না। তখন শিক্ষকদের সাথে কথা বলতে সে ভয় পেতো।
অনেক সময় দেখা যেতো ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা সবাই শিক্ষকদের কথা শুনতে বুঝতে পেরেছে, শুধু চেং স্যুয়ান শ্রবণশক্তির দুর্বলতার কারণে বুঝতে পারে নাই। সেই সময় তাকে পড়াশোনায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হতো। ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সাথেও শুধু কাগজে লিখে লিখে মনের ভাব প্রকাশ করতো সে। সে অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ হলে চেংয়ের মনে এখনও দুঃখ হয়।
বর্তমানে চেং নিজের অবস্থাকে তুলনামূলকভাবে সহজভাবে নিয়েছেন। বড় হওয়ার পর আরো বেশি বধির বন্ধুর সাথে তার পরিচয় হয় এবং ইশারা ভাষা দিয়ে তিনি সবার সাথে অবাধে কথাবার্তা বলতে শুরু করেন, যেটি তাঁর জন্য বেশ আনন্দের অভিজ্ঞতা ছিল। সাধারণ মানুষ তাঁর কথা বুঝতে পারেন না, তবে বধির বন্ধুরা ঠিকই তাঁর ইশারা ভাষা বুঝতে পারে।