চীনের চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উন্নয়নের ইতিহাস
অধ্যাপক চাংয়ের কঠোর মানদন্ডের কারণে চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার স্টাইল ছিল ভিন্ন, তাদেরকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হতো। ১৯৭২ সালে চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মাত্র গঠিত হয়েছে, তখন ৭টি কোর্সে মাত্র দু’জন শিক্ষক ছিলেন। সেই সময় শিক্ষকের অভাব মেটাতে শিক্ষার্থীদের দ্রুত প্রশিক্ষণ দিয়েছেন অধ্যাপক চাং চং ফেইসহ সিনিয়র শিক্ষকরা। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের বেছে নিয়ে চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একাডেমি ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়, যাতে তাঁরা আরও বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং ফিরে এসে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়।
প্রত্নতত্ত্ববিষয়ক গবেষণায় ফিল্ড জরিপ অতি গুরুত্বপূর্ণ। গত ৫০ বছরে চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা কোর্স অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে, তবে ফিল্ড জরিপের কাজ কখনো পরিবর্তন হয়নি। শিক্ষার্থীরা মাঠে কাজ করেন এবং নিজেদের অবস্থা এভাবে বর্ণনা করেন: ‘দূর থেকে দেখলে শরণার্থীদের মতো, কাছে গিয়ে দেখলে ভিক্ষুকদের মতো। আসলে, এরা প্রত্নতত্ত্বের ফিল্ড জরিপে ব্যস্ত শিক্ষার্থী!’ এ কথা থেকে বোঝা যায় যে, প্রত্নতত্ত্বের কাজ সহজ ও আরামদায়ক ব্যাপার নয়।
চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থী তুয়ান থিয়ান চিং ১৯৯৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ফিল্ড জরিপের সময় তাদেরকে গ্রামবাসীদের বাড়িতে থাকতে হতো। তারা প্রতিদিন ২ ঘন্টা হেঁটে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটে যেতেন। ছাত্রীদের থাকার অবস্থা একটু ভালো ছিল, তবে ছাত্ররা সবসময় মাটির ঘরে থাকতেন, যে ঘরের দেয়াল কাগজ দিয়ে সাজানো, বৃষ্টি হলে মাটির ঘরে বেশ স্যাঁতসেঁতে ভাব দেখা যায় এবং দেয়ালের কাগজও খসে পড়ে। এমন ঘরে মোটা কাপড় পরলেও বেশ ঠাণ্ডা লাগে।
এমন অভিজ্ঞতা সবার জন্য পরীক্ষার মতো। যারা এমন কঠিন অবস্থা সহ্য করতে পারেন না, তারা স্নাতক হওয়ার পর অবশ্যই প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন না। যারা কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রত্নতত্ত্বের আমেজ অনুভব করেছেন, তারাই কেবল এ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার সুযোগ পেয়েছেন বা পেয়ে থাকেন।